তিনকোণা দ্বীপ | রূপান্তরের গল্প ২৫৯ | Rupantorer Golpo 259 | দস্যুমুক্ত সুন্দরবন | সুন্দরবনের গল্প | জীবনে ফেরার গল্প | Jibone Ferar Golpo | Sundarbaner Goppo | Story of Sundarbans | মোহসীন উল হাকিম | Mohsin Ul Hakim
রূপান্তরের গল্প ২৫৯ : তিনকোণা দ্বীপের পূর্ব পাশে দুটি ছোট খাল আছে। কোকিলমনি খাল থেকে মরা খাজুরে খালে যাওয়ার শর্টকাট রাস্তা। শেষ ভাটাতেও খালগুলোতে পানি থাকে। তবে সেদিক দিয়ে বড় কোনো জলযান পার হতে পারবে না। আমাদের ট্রলাটিও আটকে পড়ার কথা। তবুও চেষ্টা করলাম।
বনের এই জায়গায় এখন আটকা পড়লে আবার জোয়ার আসার আগে আর ছাড়া পাবো না। তবুও ঝুঁকি নিলাম। এখানে আটকা পড়লে বড় কোনো বিপদ হবে তা না, কিন্তু আটকে থাকলে বন বিভাগ বা কোস্টগার্ডের নজর এড়ানো সম্ভব হবে না। এখন প্রশাসনের সামনে পড়লে বড় কোনো সমস্যা নাই। কারণ কোনো বনদস্যু দলের সাথে দেখা সাক্ষাতের বিষয় নাই এই সফরে। তবুও আমরা সবার নজর এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি।
বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামবে। আকাশ এখন বেশ পরিস্কার। চাঁদ উঠেছে পূর্ব আকাশে। আকাশ এতো পরিস্কার যে পশ্চিমে সূর্য আর পূর্ব আকাশে চাঁদ একসাথে দেখা যাচ্ছে। পূর্ণিমার চতুর্দশীর চাঁদ। বেশ বড়সড়। এই চাঁদের প্রভাবে নদী-সাগরে জোয়ার ভাটা হয়। প্রতি ছয় ঘন্টায় পানি বাড়ে আর কমে। স্রোত যায় উজান আর ভাটিতে।
ছোট খালটি পার হওয়ার সময় ভেবেছিলাম আটকে যাবো। কিন্তু ততোক্ষণে জোয়ার হয়েছে। খেয়ালই করিনি যে ভাটা শেষ হয়ে জোয়ার লেগেছে। তার মানে স্রোত ঘুরে গেছে উল্টো দিকে। পানিও বাড়বে। তাই আবারও পশুর নদীতে ওঠার চেষ্টা করবো।
মামুন বললো, উজান ঠেলে যাবেন ভাই? বললাম, কেন? যাওয়া যাবে না? মামুন বললো, যাওয়া যাবে। কিন্তু জোগার গোন চলে। স্রোত বেশি। আগানো যাবে না। জানতে চাইলাম, জোগার গোন কী? বললো, কাল পূর্ণিমা। চাঁদের হিসাবে ভরা কাটাল। জোয়ার ভাটার চাপ এখন অনেক বেশি।
ট্রলারের তলা ঠেকছে। কিন্তু এগুনো যাচ্ছে। জঙ্গলে অসুবিধা যেমন আছে। তেমনই সুবিধাও আছে। জোয়ার আসলে কোথাও আটকে থাকা লাগে না। একটু হিসাব করে চলতে পারলে সময় মতো যেকোনো জায়গায় পৌঁছে যাওয়া যায়। হিসাব মিলাতে না পারলে কখনও কখনও বিপদেও পড়তে হয়। অবশ্য বন উপকূলের মানুষ এই হিসাব করতে জানে। জেলেরা চোখ বন্ধ করে চলাফেরা করে এখান থেকে ওখানে।
ছোট খালটির শেষ মাথায় বেশ বড় চর জেগেছে। সেই চরে মদনটাক পাখির ঝাঁক বসেছে। পাখিগুলো বড় আকৃতির। মামুন বললো, এই অঞ্চলে মদনটাকের বাসা আছে। ভোরবেলা বের হয়। সারাদিন এদিক সেদিক উড়ে বেড়ায়। তারপর ফিরে আসে এখানে। সকাল আর সন্ধ্যায় এই জায়গায় পাবেন ওদের। বললাম, ডান পাশ দিয়ে ট্রলার চালাও। ওদের বিরক্ত করো না।
ছোট খাল থেকে বের হয়ে উঠলাম মরা খাজুরে খালে। পূর্ব দিকে অর্থাৎ বাম পাশে চলে গেছে কোকিলমনি। পশ্চিমে পশুর নদী। আধা ঘন্টার মতো পথ। এই খালটি আমার দেখা সুন্দরবনের সবচেয়ে সুন্দর খাল। একবেলা থাকলে এখানে বনের প্রায় সব ধরনের বন্যপ্রাণির দেখা মিলবে। বিশেষ করে ভাটার সময় এই খালের দুই প্রান্তে বাঘ ছাড়া বাকী সব বন্যপ্রাণি ও পাখিদের মেলা বসে। ঝড় বৃষ্টি হলেও এদিকটা নিরাপদ থাকে। দুই পাশের কেওড়া বন সুরক্ষিত রাখে বন্যপ্রাণিদের।
বড় খালে উঠে দেখি সূর্য প্রায় ডুবে গেছে। আমরা কি রাতটা এখানেই থাকবো? নাকী বড় নদীতে আবার বের হবো? মামুন বললো, জোয়ার লেগে গেছে তো! এখন আর রোলিং থাকবে না। স্রোত আর বাতাস একই দিকে বইছে। কিন্তু আমরা যাবো দক্ষিণে। এখন যে স্রোত সেই চাপের বিরুদ্ধে ট্রলার নিয়ে যাওয়া খুব কঠিন হবে। বললাম, সামনে সুবিধাজনক জায়গা দেখে নোঙ্গর করো।
এদিকটা অভয়াশ্রম। কিন্তু পুরো চর ধরে খুঁটি পোঁতা। চরপাটা জাল পাতা হয় এখানে। ভাটা শেষ হওয়ার আগে খুঁটির সাথে জাল বেঁধে কাঁদার সাথে মিশিয়ে রেখেছে। ভরা জোয়ারে এসে জাল উঠিয়ে দিবে। তারপর আবার আশেপাশে গিয়ে গা ঢাকা দিবে। ভোর বেলার ভাটায় যখন পানি নেমে যাবে তখন এসে মাছ তুলবে। নিষিদ্ধ হলেও বন বিভাগের সঙ্গে এক রকমের বোঝাপড়া করে মাছ ধরা চলে এখানে।
এই খালেই থামবো আমরা? পশুরের মুখে ট্রলার রাখবো? নাকী তার আগেই কোথাও থামবো আমরা? মামুন বললো, ভাইকে ডাক দেই। মানে বেলায়েত সরদারকে ডেকে সিদ্ধান্ত নিবো। হাল ধরলাম আমি। মামুনকে বললাম সরদারকে ডেকে আনো। আমাদের আরেক সহযোগী শহীদুল কাকুকে বললাম, চা-এর পানি গরম দেন।
কাঁচা ঘুম থেকে টেনে তুললাম বেলায়েত সরদারকে। সিদ্ধান্ত হলো আজ আর বড় নদীতে বের হবো না। সরদার বললেন, আবহাওয়া দেখে মনে হয় সাগরে সিগন্যাল চলে। এই রাতে বড় নদীতে উঠলে বিপদ হতে পারে। মামুনকে বললেন, ট্রলার কেমন করে গড়াচ্ছে দেখছিস? আমি বললাম, এভাবে দোলার কথা না। ঘটনা কী? মামুন হাঁটা দিলো। ইঞ্জিন রুমে গিয়ে জানালো, খোলের ভিতরে পানিতে ভরে গেছে।
লম্বা চওড়া গালি চললো কিছুক্ষণ। সরদারকে বললাম, ঘুম থেকে উঠেই এমন গালিগালাজ করবেন? উনি বললেন, তলা তো ফুটা হয়ে গেছে। ওরা খেয়াল করবে না? চা বানানো বন্ধ করে শহীদুল কাকুও উঠে দৌড় দিলেন। মামুন আর কাকু মিলে পানি সেঁচতে নেমে পড়লো। নিচু হয়ে ইঞ্জিন রুমে তাকিয়ে দেখি পানি আর পানি।
ভাগ্যিস আমাকে ডাক দিছিলেন! সরদার বললেন, এই অবস্থায় বড় নদীতে গেলে আর ফিরা লাগতো না ভাই। ঘসিয়াঙ্গাড়ী থেকে বের হয়ে যখন রোলিং-এ পড়লাম, তখনই পানির ধাক্কায় তলায় ফাটল ধরছে। মোটামুটি জরুরি অবস্থা চলছে ট্রলারে। টান টান অবস্থা।
আমি একটু পাশে সরে দাঁড়ালাম। আপাতত একটি নিরাপদ জায়গা দেখে ট্রলার রাখতে হবে। সরদার বললেন, ট্রলার ডক করতে হবে ভাই। ফাটল সারাতে হবে। ডক করা মানে ট্রলারটি এমন ভাবে রাখা হবে যাতে তলার ফাটল সারানো যায়।
এই জঙ্গলে ট্রলার ডক করবেন কী ভাবে ভাই? সরদার বললেন, ও কোনো ব্যাপার না। দেখেন কী করি! বাম দিকে বিশাল চর। এদিকে যাবো না। এদিকে জঙ্গলও বেশ ঘন। তাই আমরা খালের মাঝখান থেকে সরে এসেছি ডান পাশে। এদিকে ভাঙ্গন আছে জায়গায় জায়গায়। জঙ্গলও একটু হাল্কা। সরদার বললেন, ডাঙ্গায় নেমে কাজ করতে হবে। সারা রাতও লাগতে পারে। এর মধ্যে বৃষ্টি না নামলেই হয়।
এদিকে প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। খেয়াল করে দেখি, খালের দুই পাশে শত শত হরিণ। পাল ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোনো কোনো হরিণের দল গোল হয়ে বসে আছে। একটু ভালো করে খেয়াল করলে বনের ভিরটাও দেখা যাচ্ছে। কেওড়া বনের নিচে ঝোপ জঙ্গল কম থাকে। ভিতরে তাকিয়ে দেখি হাজার হাজার হরিণ।
শুধু হরিণ না। বন্য শুকরের দল ঘুরে বেড়াচ্ছে। বানরের পাল দৌড়ঝাঁপ করছে। একদিকে বেশ কয়েকটি উদবিড়াল কায়দার মধ্যে লুটোপুটি করছে। খালের উল্টো দিকে তাকিয়ে দেখি চরের উপর গা এলিয়ে শুয়ে আছে একটি কুমির। এরপর কয়েকটি ছোট আকৃতির কুমির দৌড় দিয়ে নামলো খালে।
আলো আঁধারির মধ্যে বুকের ভিতরটা শিরশির করে উঠলো। বললাম, এখানে তো কুমিরও আছে। পানিতে নেমে ট্রলার সারানোর কাজটা রাতে না করলে হয় না? সরদার বললেন, সকালে করলে ভালো হয়। বললাম, এখন তো জোয়ার হচ্ছে।
ট্রলার না সারিয়ে তো বের হতে পারবো না। তাড়াহুড়ো করে লাভ নাই। বললাম, আপাতত একটু বিশ্রামও নেওয়া দরকার। রাতের খাবারটা একটু জমিয়ে খেতে হবে। কথা বলতে বলতে সুবিধাজনক একটি জায়গা খুঁজে ট্রলার থামালাম। বড় একটি কেওড়া গাছের ডালে বাঁধা হলো ট্রলার। পানি সেঁচা শেষ করে শহীদুল কাকু ফিরেছেন রান্নাঘরে। একটু পর মুড়ি মাখা আর চা নিয়ে হাজির হলেন তিনি। সন্ধ্যার নাস্তা করতে গিয়ে বুঝলাম বেশ ক্ষুধা লেগেছে।
খালের দুই পাশ দিয়ে হাজার হাজার পাখি উড়ছে। পানির উপর দিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে বাটাং পাখির ঝাঁক। সাদা বকগুলো বসে আছে কেওড়া গাছে। কয়েকটি দাঁড় কাক এসে বসেছে আমাকে কাছের একটি গাছে। চা খেতে খেতে বেলায়েত সরদার বললেন, ও ভাই, এমন জায়গায় দাঁড়ালেন? ওই যে দেখেন, পুরো চর ধরে জাল পাতা। এরা চুরি করে মাছ ধরে। আমাদের দেখলে ওরা তো আর আসবে না। বললাম, এই খোলা ময়দানে চুরি করে মাছ ধরা যায়? ওরা সমঝোতা করে মাছ ধরে।
পাশেই কোকিলমনি ফরেস্ট অফিস। সেখানে একটি কোস্টগার্ড এর পোস্ট আছে। এজন্য বিষের কারবার এদিকে চলে না। তাই এই খালে মাছেরও অভাব নাই। জেলেরা তাই এই খালে মাছ ধরার জন্য মুখিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট কয়েকজন মহাজন আছে যারা সবকিছু ম্যানেজ করে জেলে পাঠায় তিনকোণা দ্বীপে।
সন্ধ্যাটা অসাধারণ। সূর্য ডোবার আগেই চাঁদ উঠেছে। চতুর্দশীর উজ্জল চাঁদ। মনে হচ্ছে অনেক নিচে নেমে এসেছে চাঁদ মামা। তার আলোয় চারপাশ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। সরদার একটি কাগজের ঠোঙ্গা নিয়ে সামনে ধরলেন। বললেন, দেখেন তো পড়তে পারেন কী না! চাঁদের আলোয় কাগজের লিখাগুলো স্পষ্ট পড়তে পারছি। ছোট বেলায় শুনতাম, চাঁদের আলোয় নাকী পত্রিকাও পড়া যায়। এবার তার প্রমাণও পেলাম।
রাতের সুন্দরবনের সৌন্দর্য অন্য রকম। ঝিঁঝিঁ পোকারা জমাট বেধে ডাকতে থাকে। বাতাস আর পানির শব্দের সাথে মিলিয়ে অদ্ভুত সুন্দর এক পরিবেশ তৈরি হয়। এসময় চুপচাপ বসে থাকতে ভালো লাগে। সরদার বললেন, আপনারা বসেন। আমি রাতের রান্না চড়াই।
কী খাবো আজ ভাই? সরদার বললেন, নতুন কিছু খাওয়াবো ভাই। বললাম, যাই করেন একটু ডাল ভাত রাখবেন। সাথে শুকনা মরিচ পুড়িয়ে একটা ভর্তা বানাবেন। তরকারি আমার না হলেও চলবে। তবে আপনি কিছু বানালে আমাদের আপত্তি নাই। হাঁটা দিলেন সরদার। রান্নাঘরে তাকে সহযোগিতা করার জন্য আছেন শহীদুল কাকু।
জোয়ার হয়ে গেলেও খালে মাছের লাফঝাঁপ দেখছি। জোয়ার হয়েছে প্রায় দুই ঘন্টা আগে। পানি বেড়েছে। দূরে তাকিয়ে দেখি জেলেদের নৌকায় মিটমিট করে জ্বলছে কেরোসিনের বাতি। আমাদের দেখে ওরা কী করবে মনে হয় বুঝতে পারছে না। টর্চ জ্বালিয়ে তাদের ইশারা করলাম। প্রথমে ভয় পেয়ে তারা আবার খালের ভিতরে ঢুকে পড়লো। আরও এক ঘন্টা পর দেখি বাতি নিভিয়ে নৌকা চলছে। আসছে এদিকেই। আমাদের সামনে পিছনে অনেকগুলো চর জাল। পুরো জোয়ারে জালগুলো টেনে দিতে হবে। সময় মতো কাজটি করতে না পারলে পুরো একটা দিন নষ্ট হবে তাদের।
ঠিক উল্টো দিক দিয়ে চলছে নৌকাগুলো। একটার পিছনে একটা। না হলেও নয়টি নৌকা। আবছা আলোয় যেটুকু দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হলো সবগুলোই চরপাটার নৌকা। টর্চ জ্বালিয়ে ইশারা দিলাম আবার। কিন্তু পাল্টা সাড়া দিলো না কেউ। এবার বেলায়েত সরদার চিৎকার করে একটা গালি দিলেন।
এবার নৌকার মুখ ফিরলো এদিকে। আসবে আসবে না করছে তারা। এরপর চিৎকার করে ডাক দিলাম। বললাম, আমাদের ট্রলার ফেটে গেছে ভাই। তাই এখানে আসছি। ভয়ের কিছু নাই। আপনারা আসেন।
বেলায়েত সরদার বললেন, এতো সুন্দর করে বললে ওরা আসবে না ভাই। সুন্দরবনের জেলেরা শক্তের ভক্ত। এই জঙ্গলে সুন্দর করে ডাকলে ওরা পাত্তা দেয় না। বললাম, পাত্তা না দিলে না দিক। না আসলেও তো সমস্যা নাই। খামোখা খারাপ ব্যবহার করবো কেন?
নৌকাগুলো কাছে চলে এসেছে। ট্রলারের সাথে ভিড়লো একে একে আটটি নৌকা। আমাকে দেখেই চিনে ফেললো ওরা। বললাম, ও ভাই, আপনি আসছেন? সবাইকে চিনি না। তবে সাদা চুলের মানুষটিকে চিনি। মংলা বাড়ি। এই জেলে বহরের মহাজন তিনি।
কুশল বিনিময় করলাম। ওরা বললো, পাটা জাল তুলতে হবে ভরা জোয়ারে। এই খালে তাদের জাল আছে তিনটি। অন্য পার্টির জাল আছে আরও সাতটি। এছাড়া খালপাটার জেলে আছে অনেকগুলো। কাঁকড়ার জেলে আছে শ’ খানেক। বড়শির নৌকাও আছে দশটার ওপর। বললাম, অভয়াশ্রমে এতো জাল ফেললে মাছ তো হারায়ে যাবে! ওরা বললো, আগে তো এতো নিচে আসা লাগতো না। বিষের কারণে লোকালয়ের কাছাকাছি সুন্দরবনে আর মাছ পাওয়া যায় না। পেট চালাতে তাই নিষিদ্ধ খালে মাছ ধরছে তারা।
বললাম, রাতে থাকেন এখানে। আমাদের সাথে খাওয়া দাওয়া করবেন। ভোরের ভাটায় আমিও যাবো আপনাদের সাথে। মাছ ধরা দেখবো।
মোবাইল ফোনে চার্য দিতে হবে। প্রয়োজনীয় কিছু জিনিষপত্রও নিতে হবে। ট্রলারের ছইয়ের নিচে গেছি। দেখি মামুন সেখানে গালে হাত দিয়ে বসে আছে। আমাদের ব্যাগ-বোঁচকা আর কাঁথা-বালিশ ভিজে আছে। মনে পড়লো সেই রোলিং এর কথা। মামুনকে বললাম, চিন্তা করে লাভ নাই। ভেজা কাপড় শুকানোর কোনো পথ নাই। কাল রোদ উঠলে শুকিয়ে নিও।
মামুনকে বললো, রাতে শুবেন কী করে? বললাম, টেনশন করো না। তক্তার উপর শুয়ে পড়বানে। কোনো রকমে রাতটা কেটে যাবে। তুমি বড়শি রেডি করো। মাছ ধরতে বসবো।
( ছবিতে আমাদের মামুন)
(২০১৬ সালের ঘটনা, সুন্দরবনের তিনকোণা দ্বীপ)