এটাই শেষ, সারেন্ডার আর করাবো না | রূপান্তরের গল্প ৩৫৮ | Rupantorer Golpo 358 | দস্যুমুক্ত সুন্দরবন | সুন্দরবনের গল্প | জীবনে ফেরার গল্প | Jibone Ferar Golpo | Sundarbaner Goppo | Story of Sundarbans | মোহসীন উল হাকিম | Mohsin Ul Hakim
রূপান্তরের গল্প ৩৫৮ : থরথর করে কাঁপছে ওরা। অথচ প্রত্যেকে এক একজন ডাকসাইটে বনদস্যু। তাদের ভয়ে কাঁপে পুরো সুন্দরবন। জেলেরা থাকে মহা আতঙ্কে। বনরক্ষীরাও তাদের এড়িয়ে চলে। পশুর নদী থেকে রায়মঙ্গল পর্যন্ত সুন্দরবনে তাদের আধিপত্য ছিলো। বঙ্গোপসাগরের জেলেরাও সন্ত্রস্ত এই নোয়া বাহিনীর ভয়ে। আজ তারাই কেমন নরম হয়ে গেছে!
RAB এর ট্রলারে দস্যুদের রেখে এসেছি। চলমান অবস্থায় তাদের নাম-ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য নেওয়া হচ্ছে। অস্ত্র-গুলির হিসাব মিলানোর কাজ চলছে। আত্মসমর্পণের পর দস্যুদের থানায় নেওয়া হবে। মামলা হবে, জমা দেওয়া হবে অস্ত্র-গুলি।
ট্রলার চলছে পূর্ণ গতিতে। সাথে RAB আছে বলে বন বিভাগ কাউকে বাধা দিচ্ছে না। বরং RAB বা কোস্টগার্ড দেখলে তারা অন্য দিকে তাকিয়ে থাকে। অফিসে উঠে না পড়লে কোনো কথায় যায় না। বনরক্ষীরা বলেন, দস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে এসে প্রশাসনের লোকজন মাঝে মাঝে তাদের উপর চড়াও হয়। বিষয়টি খুব অসম্মানের। এনিয়ে কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। মামলাও খেতে হয়েছে। আর কিছু না হলেও এক একটি মামলার সাক্ষী বানানো হয় তাদের। সব মিলিয়ে ঝামেলা বাড়ে।
এসব নিয়ে কথা হলে বনরক্ষীদের পাল্টা প্রশ্ন করে বসি। বলি, দস্যুদের দেওয়া তথ্যে বনদস্যুতায় সহযোগিতা করার অভিযোগ আসে আপনাদের কিছু লোকের নামে। তার তদন্ত তো করবেনই উনারা। এছাড়া দস্যুদের সহযোগিতা করার কিছু তথ্য প্রমাণ তো আমার কাছেও আছে। উনারা বলেন, বনের মধ্যে থাকি। দস্যুদের অসহযোগিতা করার সুযোগ আছে? আমি বলি, বিষয়টি আপনাদের স্যারদের জানাবেন। উনারা বলেন, আমাদের কথা কেউ শুনে না ভাই। আসলে সব মিলিয়ে জঙ্গলের পরিস্থিতি বেশ জটিল। এক লাইনে সমাধান টানা যায় না।
ভদ্রা পেরিয়ে গেলাম অনায়াসে। বনরক্ষীরা আমাদের দেখেও দেখলেন না। ভদ্রা থেকে হাড়বাড়িয়া পর্যন্ত পশুর নদীতে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙ্গর করা। লাইটারেজ জাহাজ আর কার্গোতে মালপত্র নামানো হচ্ছে। বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। আমরা সেগুলোর মাঝখান দিয়ে এগিয়ে চলছি। পশুর নদীতে অসংখ্য জাল পাতা। তবে জেলেরা নাই। শেষ ভাটায় আসবে তারা।
মরাপশুর খালটির মুখেই বন বিভাগের অফিস। তবে এই টহল ফাঁড়ির কর্মীরা ট্রলার নিয়ে বসে আছে বড় নদীতে। পাহাড়া দিচ্ছে। অন্য সময় হলে আমাদের থামানোর চেষ্টা করতেন। কিন্তু পেছনে RAB এর ট্রলার। তাই দেখেও আমাদের ডাক দিলেন না। আরেকটু এগিয়ে পড়লো জোংড়া ক্যাম্প। ট্রলার নিয়ে এই ফরেস্ট অফিসের কর্মীরা পশুর নদী পাড়ি দিচ্ছেন। সম্ভবত বাজার নিতে যাচ্ছে। জোংড়ার উল্টো পাশে জয়মনির ঘোল। আরেকটু এগিয়ে বাম পাশে সুন্দরবনের করমজল খাল। এর উল্টো দিকে চিলা বাজার। বেলায়েত সর্দারের বাড়ি ওখানে।
গলুই থেকে সরে আসলাম। কারণ এখন আড়াআড়ি বড় নদী পার হবো। এসময় রোলিং হয়। সামাল দিতে না পারলে নদীতে পড়তে হবে। সুন্দরবনে চলার সময় এটুকু সতর্কতা পালন করতেই হয়। নদী বা সাগরে বেশি ঢেউ থাকলে ট্রলারের মালপত্রও গুছিয়ে রাখতে হয়। মামুন আর শহীদুল কাকু গোছগাছ করছেন।
পশুর নদীতে এখন শেষ জোয়ার। তাই খুব বেশি ঝামেলা হলো না। মংলা খালের মুখে অনেকগুলো জাহাজ ও কার্গো রাখা। সেগুলোর মাঝখান দিয়ে ট্রলার চালিয়ে আমরা পৌঁছালাম ঘাটে। ভিড়লাম মংলার পিকনিক কর্নার ঘাটে। এখানে বন বিভাগের একটি রেস্টহাউজ আছে। RAB এর গাড়ি বহর এখানে অপেক্ষা করছে।
বাকী দুটি ট্রলারও থামলো। জেটিতে অল্প কিছু মানুষ আছে। তারা সবাই নোয়া বাহিনীর দস্যুদের আত্মীয় স্বজন। হাতে সময় নাই। এক নজর দেখা হলো শুধু। স্বজনরা বেঁচে আছে, তাতেই খুশি তারা। জেটিতে দাঁড়িয়ে তাদের সাথে কথা হলো। বললাম, আপনারা আর দৌড়াদৌড়ি করবেন না। রাতে থানায় আনা হবে। থানা হাজতে দেখা করবেন। এছাড়া কাল তাদের বাগেরহাট আদালতে তুলবে পুলিশ। সেখানেও দেখা করতে পারবেন। ওদের সাথে কাপড়সহ দৈনন্দিন ব্যবহারের কিছু নাই। সেগুলো দিয়ে আসবেন।
বনদস্যুদের উঠানো হলো দুটি মাইক্রোবাসে। এর মধ্যে আমাদের গাড়িও চলে এসেছে। সহকর্মীদের উঠতে বললাম। বেলায়েত সর্দারদের বিদায় দিলাম। তারপর RAB কর্মকর্তাদের সাথে কিছুক্ষণ কথা হলো। উনারা নোয়া বাহিনীর ট্রলারটির খোঁজ করছেন। বললেন, ওদের ট্রলারটা আনলাম না আমরা ভাই? বললাম, সেটা তো জাহাঙ্গীর বাহিনীর কাছে। একজন বললেন, একটা ভিন্ন মডেলের বন্দুক দেখলাম। কিন্তু তার গুলি পাইনি। বললাম, সেগুলোও জাহাঙ্গীরের কাছে। ভবিষ্যতে সে যদি সারেন্ডার করে তাহলে ওই গুলিগুলো পাওয়া যেতে পারে। আপাতত অস্ত্র-গুলি যা পাওয়া গেছে তাই নিয়ে চলেন। বাকীটা পরে দেখবো।
গাড়িতে চড়ে বসলাম। ফোন দিলাম বরিশাল RAB এর উপ অধিনায়ক মেজর আদনান কবীরকে। বিস্তারিত জানেন তিনি। তারপরও জানালাম। উনি ধন্যবাদ জানালেন। বললেন, এখন এক টানে চলে আসেন ভাই। একটু পর ফোন দিলেন বরিশাল RAB এর নতুন অধিনায়ক লে কর্নেল আনোয়ারুজ্জামান। ক্যাডেট কলেজের সূত্রে আমার ব্যাচমেট। বললেন, তোরা ঠিকঠাক আছিস তো দোস্ত? বললাম, সব ঠিকঠাক। ওদিকের সব ঠিক তো? মন্ত্রী আসছেন তো? উনি বললেন, উনি সময় মতো রওনা দিবেন।
গাড়ি বহর চলছে। মংলা থেকে সোজা যাবো কুয়াকাটা। লম্বা পথ। বাগেরহাটের পর পিরোজপুর। শহর ছাড়িয়ে এগুতেই কচা নদী। একটা ঘুম দিয়ে উঠেছি ততোক্ষণে। ফেরিতে উঠলাম। দেখি বনদস্যুরা লাইন ধরে বসে পড়েছে, বমি করছে। আমরা তো হাসতে হাসতে শেষ। সাগরের রোলিং সামাল দেওয়া মানুষগুলোর কী বেহাল অবস্থা! চোখ মুখে পানি দিতে দিতে একজন বললো, গাড়িতে চড়ি না মেলা বছর ভাই! বনদস্যু মনির এসে পাশে দাঁড়ালো। কানে কানে বললো, এদের নিয়ে চলেন আপনি ভাই?
কেন ভাই? কী হলো? উত্তরে মনির বললো, গাড়িতে উঠতেই প্রশাসনের একজন জিজ্ঞেস করলো, সাংবাদিক মহসিনকে কতো টাকা দিছো তোমরা? আবার হাসলাম। বললাম, মন খারাপ করবেন না। এরা সবাই আমার সম্পর্কে জানে না।
বেকুটিয়া ফেরি পার হয়ে আবার রওনা হলো আমাদের গাড়ি বহর। কুয়াকাটা পৌঁছাতে পৌঁছাতে দুপুর গড়াবে। পথে আর বিরতি নিবো না। একবারে অনুষ্ঠান স্থলে দাঁড়াবো। বরিশাল থেকে পটুয়াখালী হয়ে কুয়াকাটা যেতে আগে অনেক সময় লাগতো। এখন সবগুলো নদীর উপর ব্রিজ হয়েছে। রাস্তাও নতুন।
কুয়াকাটার রাখাইন মার্কেটের মাঠে অনুষ্ঠান হবে। গাড়ি থেকে নেমে সহকর্মীদের নিয়ে সেখানে পৌঁছালাম। নোঢা বাহিনীর দস্যুদের আলাদা জায়গায় রাখা হলো। তাদের অস্ত্রগুলো সাজানো হচ্ছে একটি টেবিলের উপর। স্থানীয় সাংবাদিকরা এসেছেন। যোগ দিয়েছেন পটুয়াখালী ও বরগুনার মাছ ব্যবসায়ীরা। পাথরঘাটার মোস্তফা চৌধুরী, কুয়াকাটার আনসার ভাইরা দলবল নিয়ে এসেছেন। সাগরের জেলেরাও এসেছে দলে দলে। সুন্দরবনের ডাকাতদের চোখের সামনে দেখার শখ তাদের।
RAB কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা, সাংবাদিকদের সাথে আড্ডা চলছে। এর মধ্যে দেখি মংলা থেকেও কিছু মানুষ এসেছে। তাদের মধ্যে কয়েক জন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স। ভালো করে চিনি, ডাকাতদেরও সোর্স তারা।
আমাকে দেখে এগিয়ে আসলো একজন। মংলার কুখ্যাত সেই সোর্স। যে আমার নাম করে জাহাঙ্গীর বাহিনীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলো। জানতে চাইলাম, আপনারা কেমন করে খবর পেলেন? তার উপর দূরের পথ! বললো, খবর টুকটাক আমরাও পাই। বললাম, আপনারা তো খবরের ব্যবসা ভালো করে। চোরের খবর পুলিশকে দেন আর পুলিশের খবর চোরকে। দুই পক্ষ থেকেই সুবিধা নেন। তারপরও হাসিমুখে এসে পাশে দাঁড়ালো সে। একটা ছবি তুলে সরে পড়লো।
মাইকে ঘোষণা হচ্ছে, কিছুক্ষণের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসবেন। ওদিকে আকাশে হেলিকপ্টারের শব্দ। পাশেই কোথাও হেলিপ্যাডে নামলো সেটি। দশ মিনিট পর মস্ত্রী আসলেন। অনুষ্ঠান শুরু হলো।
সুন্দরবনের ত্রাশ জলদস্যু নোয়া বাহিনী আত্মসমর্পণ করলো। অনেকেই বক্তৃতা দিলেন। মন্ত্রী বললেন, বনদস্যুদের পৃষ্ঠপোষকদের ধরা হবে। সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানালেন। আমার নাম ধরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। আমি দর্শক সারিতে দাঁড়িয়ে শুনছি। মাঝে মাঝে সরাসরি সংবাদে ঢুকছি। বাকী কাজ করছেন যমুনা টিভির বরিশাল ব্যুরো প্রধান কাওসার ও পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি জাকারিয়া হৃদয়।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা বিদায় নিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কাছে ডেকে ধন্যবাদ জানালেন। বললেন, জাহাঙ্গীরকে সারেন্ডার করাও। বললাম, তার সাথে কথা হয়। কিন্তু আমার সাথে সম্পর্ক ভালো না। ওকে বিশ্বাস করতে পারছি না। উনি বললেন, চেষ্টা করো। RAB এর সিনিয়র কর্মকর্তারা হাত মিলালেন। উনাদের বিদায় জানিয়ে আত্মসমর্পণ করা বনদস্যুদের নিয়ে রওনা হলো RAB এর বহর। আজকেই তাদের থানায় দেওয়া হবে। মামলা হবে, কাল আদালত হয়ে দস্যুরা যাবে জেলখানায়।
আসর ভাঙলো। বাকী সবাই যে যার মতো বিদায় নিলো। ভাবছি আজ কুয়াকাটায় থেকে যাবো। পটুয়াখালীর ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আনসার ভাইয়ের সাথে কথাবার্তা হলো। জেলেরা বললো, সারেন্ডার হচ্ছে কিন্তু সাগরে জলদস্যুদের আতঙ্ক কমছে না। একটা যায়, আরেকটা আসে। কোনো পরিবর্তন তো দেখছি না। বললাম, সত্যিই পরিবর্তন নাই?
জেলেরা ঠিক বুঝতে পারছে না কী বলবে। বললাম, দুই বছর আগে কয়টা বাহিনী চাঁদা চাইতো? ওরা বললো, অনেকগুলো। বললাম, প্রতি গোনে সাগরে কতোগুলো দস্যুতার ঘটনা ঘটতো? কতো জন মাঝি অপহরণ হতো? এখন কয়টা হয়? জেলেরা বললো, আগে প্রতি গোনে সাগর থেকে শ’এর উপর লোক তুলতো সুন্দরবনের ডাকাতেরা। তবে এখন সব গোনে সাগরে আসে না ওরা। বললাম, এখন কে কে ফোন দেয় আপনাদের? জেলেরা বললো, জাহাঙ্গীর বাহিনী আর আলিফ বাহিনী। বললাম, তাদের ব্যবস্থাও হবে দেখবেন। হয় সারেন্ডার করবে, না হয় মরবে। জঙ্গলে থাকতে পারবে না তারা। ট্রলার মালিক সমিতির নেতা আনসার ভাই রাতের খাবারের নিমন্ত্রণ দিলেন। বিদায় নিলো সবাই।
পলিন বললেন, এতো কিছু করার পরও তারা আপনার টাকার খোঁজ খবর নেয়। এতো বড় অনুষ্ঠান হয়। সবকিছু আপনিই করেন। কিন্তু আপনার জন্য একটা চেয়ার রাখে না ওরা। আর দশ জনের মতো আপনিও দাঁড়িয়ে থাকেন। বললাম, মন খারাপ করবেন না। ওরা ওদের কাজ করুক। আমরা আমাদের কাজ এগিয়ে নেই। কী বলেন?
দুই দিনের টানা উত্তেজনা গেছে। ঘুম নাই। শরীরটা এবার অবসাদে ঘিরে ধরলো। বার বার মনে পড়ছে, আমি নিজের হাতে বনদস্যুদের এনে দিলাম RAB, এতো ঝক্কি, মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে এক একটা দস্যুদলকে আত্মসমর্পণের জন্য নিয়ে আসছি! তাদের কাছে যদি আমাকে নিয়ে তারাই নেতিবাচক প্রশ্ন করে, তাহলে আর থাকলো কি? অবসাদ ভরা শরীর নিয়ে হাঁটছি। মনটাও খারাপ।
কাউকে কিছু বুঝতে দিচ্ছি না। বার বার ওই কথাটি মনে পড়ছে। আমাকে কতো টাকা দিয়েছে দস্যুরা, RAB সদস্যরা কেমন করে এই প্রশ্ন করলো? সহকর্মী ইয়ামিন ভাই বললেন, তাও ভালো যে বিষয়টা জানতে পারছেন। আড়ালে আরও কতো কথা হয় কে জানে? এমন সময় RAB এর গোয়েন্দা প্রধান ফোন দিলেন। বললেন, পরবর্তী বাহিনী কোনটা হবে? লে কর্নেল আজাদকে খুব পছন্দ করি। মন খুলে বললাম, আর সারেন্ডার করাতে চাই না ভাই। উনি বললেন, শুনেছি আমি। আপনার সাথে একটা অন্যায় করা হয়েছে। বললেন, জাহাঙ্গীর বাহিনীকে সারেন্ডার না করালে চলবে? বললাম, দেখা যাক ভাই।
এদিকে আমার সহকর্মী পলিনেরও মন খারাপ। বললেন, চলেন ভাই বরিশাল যাই। রাতে ওখানে থাকবো। রাতে আমার বাসায় খাবেন। মা’র সাথে একটু দেখা করবেন। বললাম, চলেন। রওনা দিলাম। যেতে যেতে ভাবছি, আর সারেন্ডার করাবো না!
সারাদিন বেলায়েত সর্দারের খোঁজ নেওয়া হয়নি। ফোন দিলাম। সর্দার বললেন, পলিনের সাথে কথা হইছে ভাই। আপনারা আবার মংলা চলে আসেন। চলেন, দুবলার চর ঘুরে আসি। বললাম, ঢাকায় যাবো কাল। আপনারা বিশ্রাম নেন। আপাতত বনে নামবেন না। বনদস্যুদের কারও সাথে যোগাযোগ রাখবেন না। বিপদ কিন্তু চারপাশে। সাবধান থাকবেন।
(৭ জানুয়ারি ২০১৭, কুয়াকাটা, পটুয়াখালী)