রূপান্তরের গল্প ৩৪ | Rupantorer Golpo 34

দস্যুদল-মোহসীন উল হাকিম-RAB, দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের কাজ শুরু | রূপান্তরের গল্প ৩৪

দস্যুদল-মোহসীন উল হাকিম-RAB, দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের কাজ শুরু | রূপান্তরের গল্প ৩৪ | Rupantorer Golpo 34 | দস্যুমুক্ত সুন্দরবন | সুন্দরবনের গল্প | Sundarbaner Goppo | Story of Sundarbans | মোহসীন উল হাকিম | Mohsin Ul Hakim


রূপান্তরের গল্প ৩৪ : দস্যুরা আছে খুলনা বিভাগে। আর কাজ করবে বরিশাল RAB? বনদস্যুদের আত্মসমর্পণে খুলনা RAB কাজ করলে ভালো হয় না? প্রতিষ্ঠানটির সে সময়ের গোয়েন্দা প্রধান বললেন, প্রয়োজনে সদর দফতর কাজ করবে আপনার সাথে। রাত তখন প্রায় ১২টা। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাস।

এবার ফোন আসলো বরিশাল থেকে। বরিশাল RAB এর তখনকার উপ অধিনায়ক মেজর আদনান কবীর। আদনান ক্যাডেট কলেজের ছাত্র ছিলেন। আমিও ক্যাডেট ছিলাম। দু’জনের মধ্যে পরিচয় ছিলো আগে থেকেই। আস্থার সম্পর্কও ছিলো। আদনান বললেন, আমরা দস্যুদের আত্মসমর্পণে একসাথে কাজ করবো। বললাম তোমাদের কাজের এলাকা তো সুন্দরবন না। তিনি বললেন, বঙ্গোপসাগর থেকে জেলেদের অপহরণ করা হয়। এই সাগর আমাদের সবার। সাগরের কোনো এরিয়া নাই। জলদস্যুতা থেকে জেলেদের মুক্তি মিলতেই হবে। সেজন্য কাজ করতে গিয়ে অঞ্চল হিসাব করে পারা যাবে না। এবিষয়ে সদর দফতরের অনৃমোদন নিয়ে তিনি ফোন দিয়েছেন।

পরদিন খুলনা থেকে গেলাম বরিশাল। মেজর আদনান কবীরের হাতে তুলে দিলাম মাস্টার বাহিনীর আত্মসমর্পণের আবেদন। সেই থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কাজ শুরু হলো। বরিশাল RAB এর অধিনায়ক তখন লে কর্নেল ফরিদ। চা খেতে খেতে তিনি বললেন কাজ এগিয়ে নিতে।

দস্যুদের সঙ্গে মেজর আদনানের যোগাযোগ করিয়ে দেই। শুরু হলো আলোচনা। সারেন্ডার করবে মাস্টার বাহিনী। কী ভাবে কী হবে সেসব নিয়ে আলোচনা চললো কয়েক মাস।

পরের বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালের ৩১ মে ৫২টি অস্ত্র আর সাড়ে পাঁচ হাজার গুলি নিয়ে আত্মসমর্পন করে মাস্টার বাহিনী। শুরু হলো দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের যাত্রা।

দস্যুদের আত্মসমর্পনের কাজে যতবারই সুন্দরবনে গেছি, আমাদের চলাফেরা করতে হয়েছে রাতের অন্ধকারে। RAB, কোস্টগার্ড, পুলিশ কিংবা বন বিভাগের সঙ্গে নয়, বরং তাদের চোখে ধুলো দিয়ে আমরা বনে ঢুকেছি, বেরও হয়েছে একই ভাবে। কাঠের তৈরী ট্রলার কিংবা ছোট্ট জেলে নৌকায় রাতের পর রাত কেটেছে। পারি দিয়েছি অনেক পথ। সেই দুর্গম পথে আমাদের ভ্রমণ আর সুন্দরবনের দস্যুদের রূপন্তর নিয়ে লিখাগুলো কেমন লাগছে জানাবে। ভালো লাগলে লিখবো।

(ছবিটি সম্ভবত ২০১৭ সালের। একটি দস্যুদল আত্মসমর্পণ করছিলো। আমার পাশে সে সময়ের বরিশাল RAB এর উপ অধিনায়ক আদনান কবীর)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top