রূপান্তরের গল্প ০৫ | Rupantorer Golpo 05

দস্যুনেতা বড় ভাই, এখন সুন্দরবনের জেলে | রূপান্তরের গল্প ০৫

দস্যুনেতা বড় ভাই, এখন সুন্দরবনের জেলে | রূপান্তরের গল্প ০৫ | Rupantorer Golpo 05 | দস্যুমুক্ত সুন্দরবন | সুন্দরবনের গল্প | Sundarbaner Goppo | Story of Sundarbans | মোহসীন উল হাকিম | Mohsin Ul Hakim


রূপান্তরের গল্প ০৫ : ২০১১ সালে ওহিদ বড় মিয়ার সঙ্গে পরিচয়। সুন্দরবনের ভিতরে, তখন সশস্ত্র ডাকাত তিনি। ছোট মিয়া রাজুর বড় ভাই ওহিদ মোল্লার দস্যু জীবন আর ফেরারি জীবন মিলিয়ে ৩০ বছর হবে। অনেক বার ফিরে আসার চেষ্টা করেছেন। সম্ভব হয়নি।

২০১৭ সালের মাঝামাঝি ফেরারি জীবন থেকে আবারও দস্যু জীবনে ফিরেন। বড় ভাই বাহিনীর ভয়ে জেলেরা কোণঠাসা। একবার নিল কমলের বাইরে সাগর থেকে দুটি ট্রলার অপহরণ করে এই দস্যু দল। সঙ্গে সঙ্গে চারপাশে সাহেবরা একটি অপ্রপ্রচার রটিয়ে দেন। বলা হয় বেলায়েত সরদার নাকি এর সঙ্গে জড়িত। আমি ছুটে গেলাম বনে। দেখা করলাম এই দস্যু দলের সঙ্গে। শিবসা নদীর বাওনে একটি খালের ভিতরে পৌঁছালাম, বেশ রাত হলো। আমাদের ট্রলার থেকে নামিয়ে নিলো দস্যুরা। তারপর ট্রলারের ভিতরে তল্লাসী নেয়া হলো। আমরা অন্ধকারে হেঁটে চললাম দস্যুদের ডেরায়।

বড় ভাই এর সঙ্গে দেখা হলো সরু এক খালের মধ্যে। সেখানে রাখা ট্রলারে কাটলো পুরো রাত, গল্প আর আড্ডায়। জিজ্ঞেস করলাম আপনাদের সঙ্গে বেলায়েত সরদারের সম্পর্ক কী? জানলাম সাহেবদের সেই অভিযোগ পুরোটাই বানোয়াট। বেলায়েত সরদারকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা অংশ ছিলো সেই অপপ্রচার। যাই হোক সেই রটনা আর ধোপে টিকেনি শেষ পর্যন্ত।

আত্মসমর্পণ করবে সবাই কিন্তু এখনই না। আমি বললাম সময় দিবো না। দলের সবাই না করলো। কিন্তু ওহিদ বড় ভাই শুনলেন আমার কথা। তার এক সপ্তাহের মাথায় তাদের নিয়ে আসলাম জঙ্গল থেকে।

বয়স হয়েছে। শরীর চলে না। তারপরও সংসার চালানোর ভার তাঁর ঘাড়ে। জেলখানা থেকে বের হয়ে তাই মাছ ধরতে নামলেন তিনি। সেদিন সুন্দরবনের এক খালে দেখা হলো বড় ভাই এর জেলে বহরের সঙ্গে। রূপান্তরের এই প্রক্রিয়া বেশ জটিল। তবে এই রূপান্তর বাঁচিয়ে দিয়েছে দস্যুদের। বেঁচে গেছে বন আর সাগরের জেলে বাওয়ালীরা। বেঁচে গেছে সুন্দরবন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top