রূপান্তরের গল্প ২১৯ | Rupantorer Golpo 219

একটি টর্চ লাইট দিয়ে শুরু, বন্দুক দিয়ে শেষ | রূপান্তরের গল্প ২১৯

একটি টর্চ লাইট দিয়ে শুরু, বন্দুক দিয়ে শেষ | রূপান্তরের গল্প ২১৯ | Rupantorer Golpo 219 | দস্যুমুক্ত সুন্দরবন | সুন্দরবনের গল্প | জীবনে ফেরার গল্প | Jibone Ferar Golpo | Sundarbaner Goppo | Story of Sundarbans | মোহসীন উল হাকিম | Mohsin Ul Hakim


রূপান্তরের গল্প ২১৯ : পশ্চিম সুন্দরবনের দস্যুতার হিসাব একটু আলাদা। জঙ্গল কিংবা সাগরের দস্যুদলগুলোর সাথে এই অঞ্চলের দস্যুদেরর চাল-চলন, গতি-প্রকৃতির তেমন মিলও নাই। দলগুলো ছোট ছোট। অস্ত্র-শস্ত্রও বেশি থাকে না। সদস্য সংখ্যা সাধারণত ছয় থেকে বারো জন। অস্ত্র থাকে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে। গুলির সংখ্যাও গণা যায়।

ডাকাত দল বললেও এদের চলাফেরা থাকে চোরদের মতো। জেলেরাও এদের চোর বলে ডাকে। কারণ রাতের অন্ধকারে চোরের মতো নি:শব্দে ঘেরাও দেয় জেলেদের। তারপর উঠিয়ে নেয়, আদায় করে মুক্তিপণ। অবশ্য নিয়মিত চাঁদা দেওয়া থাকলে তাদের কাছ থেকে শুধু ডিউটির টাকা নামে কিছু টাকা নেয় তারা। মন চাইলে জেলেদের কাছ থেকে খাওয়ার জন্য মাছও নিয়ে যায়।

পশ্চিম অর্থাৎ সাতক্ষীরা সুন্দরবনের একেবারে পশ্চিম পাশে ভারত সীমান্ত। মূলত রায়মঙ্গল নদী ধরেই সীমান্ত। দুই পাশেই গহীন বন। তাই নিজেদের আড়াল করতে কখনও ভারতের অংশেও চলে যায় বাংলাদেশের দস্যুরা। আবার ওই পাশের দস্যুরাও চলে আসে এপাশে। এমন এমন দস্যুদলও দেখেছি যাদের সদস্যদের মধ্যে ভারতীয় নাগরিকও ছিলো। আবার এমন দস্যুও আছে যাদের আদি বাড়ি এদেশে। তবে পালিয়ে থাকে ওপাশে।

মৌসুম হিসাব করে দস্যুতায় নামে এরা। তারপর অস্ত্রগুলো লুকিয়ে রেখে আবার চলে যায়। পরে আবার যখন নামে, তখন লুকানো অস্ত্রগুলো বের করে নেয়। সুন্দরবন ও সাগর দিয়ে চলাফেরা করে তারা। আর ওদের সহযোগিতা করে দুই দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কিছু মানুষ। যেকারণে আইন শৃংখলা বাহিনীর পক্ষে লোকালয়ে তাদের ধরা সম্ভব হয় না।

এই অপরাধীরা ভুল করেও বাংলাদেশের ভূখন্ডে ওঠে না। কারণ ওরা জানে যে বনের ভিতরে ধরতে না পারলেও লোকালয়ে উঠলেই ধরা খাবে তারা।

খোকা বাবু নামে একটি দস্যুদল আছে এদিকে। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের গাবুরা বাড়ি এই দলের প্রধান কবিরুল। শুনেছি বেশ সুদর্শন, কিছুটা পড়ালেখাও করেছে। কিন্তু তারুন্যের শুরুতেই নানা কারণে জড়িয়ে গেছে অপরাধ জগতে। এই অঞ্চলের অনেক যুবকই অন্য কোনো অপরাধ করে পালানোর জন্য সুন্দরবনে ঢুকে পড়ে। বনের ভিতরে গিয়ে টিকে থাকার জন্য গড়ে তোলে দস্যুবাহিনী। কবিরুল ওরফে খোকা বাবু তেমনই একজন।

কবিরুলের সাথে আমার দুই/তিন বার কথা হয়েছে ফোনে। সারেন্ডার করতে বলেছি। কিন্তু কথা শোনেনি। ইদানিং নাকী এরা জেলেদের ওপর বেশ অত্যাচার করছে। আবার তাদের ধরার জন্য কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছে RAB।

প্রায় মাস খানেক ধরে ঢাকায় আছি। সুন্দরবনের ওদিকে যাইনি। তবে কক্সবাজারের ওদিককার কয়েকজন জলদস্যু যোগাযোগ করছে ঘন ঘন। কথাবার্তা বলছি। তারা সারেন্ডার করতে চায় কিন্তু ওদিকের পরিবেশ তো সুন্দরবনের মতো না। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলের দস্যুদের নিয়ে কাজ করতে হলে আমাকে যেতে হবে। অনেক বেশি সময় দিতে হবে।

হুট করে চলে গেলাম মহেশখালী। দ্বীপ জনপদ। অচেনা সবকিছু। তার মধ্য দিয়ে একটি দস্যুদলের সঙ্গে দেখা করি। তাদের কাছে বেশকিছু অস্ত্রও আছে। কিন্তু এই জলস্যুদের নিয়ন্ত্রণ করে ওদিকের কিছু মোড়ল গোছের মানুষ। তারা রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। তাই হুট করেই তাদের সারেন্ডার করানোর সিদ্ধান্ত নিলাম না। ওদের সাথে কথাবার্তা বলে ঢাকা ফিরেছি।

২০১৬ সালের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি। বরিশাল RAB-এর উপ অধিনায়ক মেজর আদনান কবীর ফোন দিয়ে বললেন, আপনি কক্সবাজারে কেন যাচ্ছেন ভাই? এদিকের কাজ তো শেষ হয়নি। এদিকে আরও কাজ করতে হবে ভাই। বললাম, এই মুহুর্তে সুন্দরবনের দস্যুদের নিয়ে কাজ করতে ইচ্ছা করছে না। তুমি ছাড়া কেউ সহযোগিতা করছেন না। বরং অসহযোগিতার অভাব নাই।

বললাম, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। এভাবে কাজগুলো করে যেতে পারলে সুন্দরবন একদিন দস্যুমুক্ত হবে। কিন্তু এর বিপক্ষের লোকজন অতি মাত্রায় সক্রিয়। তোমরা তো বদলি হয়ে অন্য কোথাও চলে যাবে। আদনান বললেন, আমি যতোদিন আছি সে পর্যন্ত কাজ করতে পারেন। বললাম, তোমার প্রতি ভরসা আছে। কিন্তু সুন্দরবনে কাজ করতে হলে আমাকে আবার ভাবতে হবে। আগে বেঁচে থাকতে হবে, সম্মান টিকিয়ে রাখতে হবে। নিজেই যদি টিকতে না পারি তাহলে কাজ করবো কী করে?

আদনানের অনুরোধে আবার যোগাযোগ শুরু হলো। পুরনো সোর্সদের সাথে কথাবার্তা বলছি। নভেম্বরে আরও একটা আত্মসমর্পণ করাতে চাই আমরা। কিন্তু এখনও কোনো দস্যুদলের সাথে সেভাবে কথা আগায়নি। আলিফ বাহিনীর সাথে কথাবার্তা চলছে। তবে সে সারেন্ডার নিয়ে নয়ছয় করছে। আমার সোর্সরা বলছে, শেষ পর্যন্ত আলিফ নাকী সারেন্ডার করবে না। তবে আমার বিশ্বাস, দেরিতে হলেও সারেন্ডার করবে সে।

এদিকে বন উপকূলের কিছু ফেরারি মানুষদের নাড়াচাড়া করছে গডফাদাররা। সোর্সরা ভয় দেখাচ্ছে নানা ভাবে। মানে লোকালয়ে পালিয়ে না থেকে সুন্দরবনে যাও। না হলে ধরা পড়ে যাবে, ক্রসফায়ারে পড়বে। বেশ কয়েকটি দস্যুদলের শুরুও হয়েছে এভাবে। একটি মাত্র টর্চ লাইট দিয়েও সুন্দরবনে দস্যুতা শুরুর ইতিহাস আছে। আলিফ, মিলন ও আলমের দস্যু হওয়ার গল্পটিও এমনই। গল্পটি এরকম….

হাতে একটি টর্চ লাইট। সঙ্গী আরও তিনজন। সারা রাত জঙ্গলের ভিতরে হেঁটে বেড়াতো তারা। রাতের বেলা এমনিতেই আতঙ্কে থাকে জেলেরা। তাই রাতের বেলা একটু ভয় দেখাতে পারলেই হয়।

সুন্দরবনের পালোকাটি খালের এদিক সেদিক অবস্থান নিতো এই তিন যুবক। একটি বা দুইটি মাছ-কাঁকড়ার নৌকা পেলেই চালাতো হামলা। হামলা বলতে বড় টর্চ এর আলো, আর হুংকার। অন্ধকারে আতংক সৃষ্টি করে ওরা কেড়ে নিত কাঁকড়া অথবা মাছ। সঙ্গে নগদ টাকা থাকলে তাও নিয়ে রওনা দিত বাড়ির উদ্দেশ্যে। এসব চলতো ২০০১ সাল থেকে। বলছি, পশ্চিম সুন্দরবনে দস্যুতা শুরু হয় কী করে!

দরিদ্র পরিবারের সন্তান মিলন। সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জে বাড়ি। রোজগারে নামতে হয় সেই ছোটবেলাতেই। শুরুতে বাবার সাথে কাঁকড়া ধরতে নামতো সুন্দরবনে। কৈশোরে কয়েকজন বন্ধু মিলে কাঁকড়া ধরতে যেতো। দাদন নিয়ে চলতো এই কারবার। কখনও ধার করতো নামার আগে। যে গোনে কাঁকড়া কম হতো, সেবার ফেরার পথে তারা দস্যু সেজে অন্যের নৌকা থেকে কাঁকড়া কেড়ে নিতো। মহাজনকে বুঝ দেয়ার জন্যই এই অপকর্মটিই করতো তারা।

মিলন বলছিল, এভাবে এক এক কোপে কাঁকড়ার বাইরে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ টাকা পর্যন্ত পেয়েছে তারা। এছাড়া ছোট বলে তাদের সন্দেহ করতো না কেউ। তখন থেকে মনের ভেতর তৈরী হয় লোভ। মিলন ভেবেছিল বড় কোনো দস্যু বাহিনীতে যোগ দিয়ে দ্রুত তার পরিবারের আর্থিক দৈন্য দূর করবে। কিন্তু বয়স কম বলে সুযোগ হচ্ছিল না। ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত এভাবেই চলে। মিলনের বয়স তখন বড়জোড় ১২/১৩। পরে বেনাপোলে চলে যায় অন্য কাজের সন্ধানে।

২০০৪ এর শেষ দিকে প্রতিবেশী আলিফের সঙ্গে দেখা বেনাপোলেই। আলিফের বুদ্ধিতে সেখান থেকে তারা ফিরে আসে নিজের এলাকায়। মাছ ধরার কাজ এর আড়ালে শুরু করে গাছ চুরি। এর কিছুদিনের মধ্যেই মোতালেব বাহিনীতে যোগ দেয় আলিফ। মিলনও চেয়েছিলো সেই দলে যোগ দিতে। অনেক অনুরোধও করেছে। কিন্তু শুরুতেই মিলনকে নেয়নি তারা। ২০০৬ এর শুরুর ডাক আসে তার। বড় দস্যুদলে যোগ দিতে বাড়ি ছাড়ে মিলন।

পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী নির্ধারিত নৌকায় করে সুন্দরবনের কলাগাছিয়ার গোঁড়ায় পৌঁছে সে। কিন্তু ১৪/১৫ বছরের এই কিশোরকে দস্যু হিসেবে তারা পছন্দ করলো না। কিছু টাকা দিয়ে তাকে বিদায় করতে বলে সেই দলের সদস্য দস্যু আইয়ুব। কিন্তু মিলন নাছোড়বান্দা।

অনেক কাকুতি মিনতির পর অবশেষে তাকে নেওয়া হয়। যোগ দেয় পশ্চিম সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ দস্যু মোতালেব বাহিনীতে। ভেবেছিলো অনেক টাকার মালিক হবে সে। অথচ ছয় মাস পর বেতন হিসেবে তাকে দেয়া হয় মোট সাড়ে ছয় হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে তো কিছুই হবে না! তাই চারদিনের ছুটির কথা বলে বাড়ি ফিরে আসে মিলন।

মাথায় ঘুরতে থাকে কী ভাবে অল্প সময়ে বেশি কামাই করা যায়! এরপর মোতালেব এর ফোন নাম্বারের সঙ্গে মিলিয়ে শেষের তিনটি নাম্বার … ৮২৭ মিলিয়ে একটি সিম তোলে মিলন। তারপর মোতালেবের কন্ঠস্বর নকল করে মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে টাকা তুলতে শুরু করে। অদ্ভুত ব্যাপার। শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া এই অঞ্চলের মানুষদের জীবন এমনই। জলদস্যুদের আতঙ্ক এতোটা বেশি যে পুরো ফোন নাম্বার মিলিয়ে দেখতো না তারা। ফোন দিয়ে চাপ দিলেই নিরবে টাকা দিয়ে দিতো।

একবার মজিবর নামের এক ব্যবসায়ী সামনা সামনি হয়ে টাকা দিতে চায়। উপায় না পেয়ে খুলনায় গিয়ে মজনুকে খুলে বলে বিষয়টি। পরে মজনুকে মোতালেব সাজিয়ে চাঁদার টাকা হিসেবে ৫০ হাজার টাকা পায় তারা। মিলনের বয়স কম, আবার দেখতেও ছোটখাট। তাই নিজে মোতালেব পরিচয় না দিয়ে মজনুকে মোতালের সাজানো হয়েছিলো। এভাবে চলতে চলতে মজনুর সঙ্গে বেশ খাতির হয়ে যায়। মজনু তখন মাছ ব্যবসায়ী। পাশাপাশি অস্ত্র-গুলির কারবারের সঙ্গে জড়িত।

খুলনাতে বসে নতুন পরিকল্পনা হয়। সেই অনুযায়ী মিলন আবার নেমে যায় সুন্দরবনে। যোগ দেয় জহিরের নেতৃত্বে চলা মোতালেবের বাহিনীতে। বাহিনী প্রধান তখন পালিয়ে ছিল। দলে যোগ দিয়েই জহিরকে বের করে দেয় মিলন সহ অন্যরা। তারপর মজনুকে নেতা বানিয়ে শুরু করে দস্যুতা। এভাবে এক মৌসুম কাটিয়ে টাকা পয়সা নিয়ে সটকে পড়ে মজনু। যাওয়ার সময় অস্ত্র গুলিগুলো আবার মোতালেবের কাছেই বিক্রি করে দেয়। নিজের হাতছাড়া হওয়া অস্ত্রগুলো নতুন করে কিনতে হয় মোতালেবকে।

২০১০ সালের কথা। মোতালেব বাহিনী তখন দোর্দন্ড প্রতাপশালী দস্যুবাহিনী। পশ্চিম সুন্দরবন তার নামে কাঁপতো। বাহিনীর কামাই ছিলো বেশ ভালো। কিন্তু সদস্য হিসেবে যে টাকা বেতন পেতো মিলন সেই টাকা ছিলো নগণ্য। কামাই করে পুরো টাকাটাই নেতার হাতে তুলে দিতে হতো। তাই দস্যুতা ছেড়ে আবারও লোকালয়ে ফিরে আসে সে।

এর মধ্যে পাটোয়ারী নামে দস্যু জগতে পরিচিতি পায় মিলন। নামটি মোতালেবের দেয়া। কয়দিন পর RAB এর হাতে ধরা পড়ে মিলন। তারপর জেলখানা হয়ে বের হয়। পালিয়ে চলে যায় ভারতে। কিন্তু সেই জীবন আর চলছিল না। তাই দেশে ফিরে আদালতে আত্মসমর্পন করে সে।

জামিন নিয়ে নিজের বাড়িতে আসলেও স্থানীয় পুলিশের সোর্সদের অত্যাচারে অতীষ্ট হয়ে আবারও বনদস্যুতায় ফিরে যায় মিলন। কয়দিন পর পরই দল বদল করে। আবার কখনও ওঠে লোকালয়ে। আমার সাথে তার পরিচয় হয়েছিলো লোকালয়ে।

মিলন পাটোয়ারীর মত কিশোর আর তরুণদের আসলে লোভ দেখিয়ে দস্যুতায় নামানো হয়। বনের বিপদ সংকুল পথ থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়াতো তারা। দস্যুতা করে যে টাকা আসতো তার প্রায় পুরোটাই চলে যেত লিডার আর বড় ভাইদের পকেটে। বছর বছর দস্যুতা করে তারা দস্যু হিসেবে পরিচিতি পায় এলাকায়। বাড়ি ফিরতে না পেরে তারা আবারও ফিরে দস্যুতায়।

কয়েকজন বিপথগামী তরুণদের নিয়ে নতুন দস্যুদল সুন্দরবনে নামে। একটি পক্ষ তাদের নামায়। এক পক্ষ তাদের অস্ত্রের ব্যবস্থা করে দেয়। আর এক শ্রেণির মানুষ লোকালয়ে বসে তাদের চাঁদা সংগ্রহ করে। এদের মধ্যে পরের তিন পক্ষই পকেট ভারী করে। জঙ্গলে নেমে আরও বড় বিপদে পড়ে বনদস্যু বনে যাওয়া সেই তরুণেরা। আমার যুদ্ধটা সেই তরুণদের ফিরিয়ে আনা। সেই কাজ শুরু হয়েছে, চলবে।

(২০০৬ সালের নভেম্বর মাসের ঘটনাপ্রবাহ। ছবিটি সাত্তার বাহিনীর এক সদস্যের)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top