বাঁচবো কী না বুঝতে পারছিলাম না! | রূপান্তরের গল্প ২২ | Rupantorer Golpo 22 | দস্যুমুক্ত সুন্দরবন | সুন্দরবনের গল্প | Sundarbaner Goppo | Story of Sundarbans | মোহসীন উল হাকিম | Mohsin Ul Hakim
রূপান্তরের গল্প ২২ : পাল্টাপাল্টি গুলি চলছে প্রায় আধা ঘন্টা ধরে। সেই আধা ঘন্টা আমাদের কাছে মনে হচ্ছিলো অনন্তকাল! চিৎ হয়ে কাঁদার ওপর শুয়ে আছি আমরা। কী হতে যাচ্ছে জীবনে, বুঝতে পারছিলাম না!!
আধা মিনিটের জন্য গুলি থামলো। কিছু একটা ঘটছে। হয়তো তারা আগাচ্ছে। মাস্টার কি গুলি খেলো? শিড়দাঁড়া বেয়ে ঘাম পড়ছে! তার মানে কোস্টগার্ড এগিয়ে আসছে! আমি কী করে নিজেদের অবস্থান জানাবো সেটা ভাবছি। ভুল করে গুলি খেতে হবে আমাদেরও। কী একটা পরিস্থিতি!!
আবার গুলি শুরু হলো। মাস্টারের বন্দুকের গুলি। যাক! দস্যুনেতা মারা যায়নি! ততক্ষণে এসএমজি আর বন্দুকের গুলির শব্দের পার্থক্য বুঝতে পারছিলাম। গোলাগুলি চললো থেমে থেমে। সময়ের সাথে সাথে কমছে ব্রাশ ফায়ার। শব্দ ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। মিনিট খানেকের মধ্যে স্পিডবোটের ইঞ্জিন চালু হলো।
স্পিডবোট খাল থেকে বের হচ্ছে। দেখতে পাচ্ছিলাম না কিছু। অনুমান করছিলাম। গতি বাড়লো একটু। বের হলো বাটলো নদীতে। সাথের দুইজনকে উঠতে না করলাম। উঠে বসলাম আমি। এবার পশ্চিমের নদী ধরে আগাচ্ছে কোস্টগার্ড। একদম কূল ধরে এগুতে এগুতে তীরে চলে আসলো। কয়েকজন জেলে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে। তাদের তুলে নিয়ে দিলো টান। একটানা ফায়ার করতে করতে উত্তরের পথ ধরলো কোস্টগার্ডের স্পিডবোট! বাঁচলাম সে যাত্রায়…!!!
(সুন্দরবনের জেলেরা তখন জিম্মি হতো অহরহ। দেড় ডজন দস্যুদল ঘুরেফিরে ত্রাশ ছড়াতো বন আর উপকূলে!)