রূপান্তরের গল্প ৩৬৬ | Rupantorer Golpo 366

মহা আতঙ্কে দুবলার চর | রূপান্তরের গল্প ৩৬৬

মহা আতঙ্কে দুবলার চর | রূপান্তরের গল্প ৩৬৬ | Rupantorer Golpo 366 | দস্যুমুক্ত সুন্দরবন | সুন্দরবনের গল্প | জীবনে ফেরার গল্প | Jibone Ferar Golpo | Sundarbaner Goppo | Story of Sundarbans | মোহসীন উল হাকিম | Mohsin Ul Hakim


রূপান্তরের গল্প ৩৬৬ : মাছ ভর্তি ট্রলার আসছে সাগর থেকে। পুরো দুবলার চর ছেয়ে গেছে। জায়গায় জায়গায় ভিড়েছে। শুঁটকির সাবাড়ের কর্মচারীরা ব্যস্ত। মাছগুলো নামানো, ধোয়ার কাজ চলছে। এখন তাদের কথা বলারও সময় নাই। সাবাড় মালিকরাও নেমেছেন কোমড় পানিতে। জোয়ার শেষ হওয়ার আগে মাছগুলো নামাতে হবে। তারপর ট্রলারগুলো ফিরে যাবে সাগরে, যার যার জালে। বছর দশ আগে কুপি বাতি দিয়ে চলতো সব কাজ। এখন সৌর বিদ্যুতে বাতি জ্বলে। রাত দুপুরেও আলোকিত থাকে দূর দ্বীপের এই সাময়িক জেলে পল্লী।

ব্যস্ততার মধ্যেই আসছে র’ চা। কোমড় পানিতে দাঁড়িয়ে ঝটপট চুমুক দিচ্ছে ওরা। সাথে বিড়ি-সিগারেটে সুখটান। সাগরের জেলেরা অনেক পরিশ্রম করে। দুই বেলা খাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় নাই। এনিয়ে খুব বেশি মাথা ব্যাথাও নাই। শুধু চা, পান আর সিগারেট থাকলেই হয়। মালিক-মহাজনদের বাজারের তালিকায় এসব থাকে সবার আগে।

রাত দুপুরে মানুষের ব্যস্ততা দেখছি। পুরো দুবলার চর যেন জেগে থাকা এক ব্যস্ত লোকালয়। আশপাশের কয়েকটি জেলার বাসিন্দা এরা। পাঁচ মাস সুন্দরবনের এই দ্বীপে না আসলে তাদের চলে না। পেট চালানো প্রধান উদ্দেশ্য। কিন্তু সুন্দরবন আর দুবলার চর তাদের জীবনের অংশ, অনেকটা নেশার মতো।

সাগর থেকে আনা মাছ ধোয়া, কাটাকুটি করে নেড়ে দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত সবাই। ভাবতাম রাতেই কেন এসব করতে হবে? এখন তো রোদ নাই। জানলাম, মাছগুলো জাল থেকে নিয়ে আসতে আসতে কয়েক ঘণ্টা কেটে যায়। তাজা থাকতে থাকতে সেগুলো নামিয়ে, কেটে-ধুয়ে চালনে দেয় জেলেরা। এতে করে মাছের মান ভালো থাকে।

রোদ না থাকলেও উত্তরা বাতাসে মাছগুলো শুকাতে শুরু করে। তারপর সূর্য উঠে। টানা রোদ আর উত্তরের শুস্ক বাতাসে শুকিয়ে যায় মাছ। এভাবে দুই-তিন দিনের রোদে কাঁচা মাছ পরিণত হয় শুঁটকি মাছে। লবণ সহ কোনো রকম রাসায়নিক দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তাজা শুঁটকি বস্তায় পুরে রাখা হয় শুকনো জায়গায়। তারপর চলে যায় আড়তে আড়তে। শুঁটকি বেশ দামী পণ্য। আমি ভাবি এতো মূল্যবান সম্পদ যারা তৈরি করে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা এমন থাকবে কেন?

সাগর পাড় ধরে হাঁটা দিলাম। পথে পরিচিত এক জেলের সাথে দেখা। মন বেশ খারাপ। বললেন, চরের অবস্থা খুব খারাপ ভাই। গেলো রাতে সাগরে ডাকাতি হইছে। তার আগে পশুর থেকে একটা মাছের ট্রলার নিয়ে গেলো। ডাকাতেরা ফোন দিচ্ছে ঘন ঘন। বিশেষ করে জাহাঙ্গীরের গরমে থাকা যাচ্ছে না। বললাম, কাউকে চাঁদা দিবেন না। ওরা শিগগিরি সারেন্ডার করবে। কথাবার্তা চলছে।

তার মানে দুবলার চর গরম। আরেকটু হেঁটে বাম দিকে চলে গেলে আলোর কোলের বোয়ালিয়ার ঠোঁটা। সেখানকার জেলেরা সবাই আমার পরিচিত। যেকোনো ঘরে আমি খেতে পারি, থাকতে পারি।

রাত প্রায় তিনটা বাজে। এতো রাতে আমাকে দেখে যেন ভুত দেখলো সবাই। বললো, আমরা দিন রাত আপনার কথা বলাবলি করছি। আর আপনি এসে হাজির! উপরওয়ালা মনে হয় আমাদের কথা শুনেছেন।

কাজ রেখে সবাই একসাথে হলো। গফুর গাজী নামে প্রবীন জেলে বললেন, আমার দুই ভাইকে ধরে নিয়ে গেছে বনদস্যু আলিফ। দুই জনের জন্য তিন লাখ করে ছয় লাখ টাকা চায়। এতো টাকা কোত্থেকে দেই? এদিকে চরের সাহেবরাও খুব গরম।

সাহেবরা গরম হবেন কেন? ডাকাতি কি আগে ছিলো না সুন্দরবনে? এটাই তো প্রথম ঘটনা না। বরং আগের বছরগুলোতে অপহরণ বেশি হতো। বড় পার্টিগুলো সারেন্ডার করার পর অপহরণ কমছে না? জেলেরা বললো, কমছে। কিন্তু চাঁদা আর মুক্তিপণের রেট বাড়ছে। জেলেরা বললো, বনদস্যুদের সারেন্ডারের পর ভয় কমতে শুরু করেছে। কিন্তু এখন আবার সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।

কয়েক বছর আগেও দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে ঘুরতো বনদস্যুরা। ২০১১-২০১২ সালের দিকে কয়েক দফা বনদস্যুদের ডেরায় গেছি। তখন দেখতাম বড় খাল বা নদীতে থাকতো তারা। ওই সময়েই শুরু হলো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ শুরু করেছে বিশেষ টাস্কফোর্স।

টানা অভিযানে কোণঠাসা হলো বনদস্যুরা। বড় নদ্রি ছেড়ে ঢুকে পড়লো ছোট ছোট খালের ভেতর। চলাফেরা করে শুধু রাতের বেলা। আগের মতো হর হামেশা জেলেদের অপহরণ করার পরিবেশ নাই। তাই চাঁদা ও মুক্তিপণের পরিমান বাড়িয়ে দিয়েছে বনদস্যুরা।

কথাগুলো বেশ মন দিয়ে শুনছে জেলেরা। বললাম, একটা পরিবর্তন আসার সময় এমন অনেক কিছুই ঘটবে। আপনারা ধৈর্য ধরেন। গফুর কাকা বললেন, ধৈর্য ধরতে অসুবিধা নাই কাকা। চল্লিশ বছর ধরে যখন আছি তখন আরও এক দুই বছর না হয় অপেক্ষা করবো। শুধু আপনি আমাদের ছেড়ে যাবেন না। বললাম, বেঁচে থাকলে হাত ছাড়বো না।

ডাকাতরা ডাকাতি করবে, মারধর করবে। এটা আমাদের কপালে লেখা। বলছিলেন, আরেক প্রবীন জেলে। বললাম, কপালের বিষয় না কাকা। এতো বছর সরকার এদিকে নজর দেয়নি। এখন তো দিচ্ছে। গত কয়েক বছরে কতোগুলো ডাকাত ক্রসফায়ারে পড়ছে হিসাব করছেন? পূর্ব সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় দস্যু জুলফু বাহিনী হারায়ে গেছে। ও যখন ছিলো তখনকার কথা মনে করে দেখেন! সবাই সায় দিলো সে কথায়।

এসময় পাশ থেকে সাইফুল নামে এক তরুণ বললো, চরে বসেই আমরা তো শেষ হয়ে যাচ্ছি মামা। বললাম, তোমার আবার কী হলো? বললো, এদিকে আমাদের দোকান পাট বন্ধ করে দিছে।

দুবলার চরের নিউমার্কেটে সাইফুলের একটা মেমোরি ট্রান্সফারের দোকান আছে। সে বললো, জেলেদের মোবাইল ফোনে গান আর সিনেমা ভরে দেই। একটা কম্পিউটার নিয়ে এবছর দোকান দিলাম। এখন সাহেবরা ঘোষণা দিছেন, মেমোরি ট্রান্সফারের দোকান বন্ধ করতে হবে। মার্কেটে আমার মতো তিনটা দোকান আছে। তিনটাই বন্ধ করে দিলো। দুই লাখ টাকা ধার করে এখানে আসলাম। এখন আমার কী হবে?

ভালো করে খোঁজ খবর নিলাম। সাহেবদের অভিযোগ, কম্পিউটারের দোকানগুলো থেকে অশ্লীল ভিডিও সরবরাহ করা হয়। এই অভিযোগে বন্ধ করা হয়েছে দোকানগুলো। সাইফুলকে জিজ্ঞেস করলাম। বললো, ইন্ডিয়ান আর বাংলাদেশি সিনেমার গানগুলো দেই। বেশি চলে বাংলায় ডাব করা তামিল সিনেমা। আর কিছু না। গান আর সিনেমা দিলে সমস্যা কোথায়? বুঝতে পারছি না। বললাম, চলো নিউমার্কেটে যাই।

সবাইকে নিয়ে হাঁটা দিলাম। যেতে যেতে শুনলাম, শুঁটকির সাবাড় মালিকরা নাকী এবিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। পাঁচ মাসের চুক্তিতে চাকরি নিয়ে আসা তরুণরা নাকী ভিডিও দেখে বখে যাচ্ছে। ওরা নিজেদের তামিল সিনেমার নায়ক মনে করছে। আগের মতো কথা শুনছে না। কিছু বললেই প্রতিবাদ করছে।

সত্যিই তো। এরা প্রতিবাদ কেন করবে? দুবলার চরে প্রতিবাদ শুরু হলে চলবে কী করে? এতো বছরের ভয়ের রাজ্য থেকে ভয় চলে গেলে চলবে কী করে? জেলেরা প্রতিবাদ করলে মহাজনের ব্যবসা টিকবে কী করে? ভয়ের ব্যবসা টিকাতে হবে। তাই সবাই মিলে প্রান্তিক মানুষদের টুঁটি চেপে ধরছে।

নিউমার্কেটে পৌঁছালাম রাত তিনটার দিকে। সর্দারকে ইশারা করলাম। খোলা হলো সাইফুলের দোকান। ততোক্ষণে অনেক মানুষ জড়ো হয়েছে। বললাম, ডিজিটাল বাংলাদেশে কম্পিউটারের দোকান বন্ধ রাখা যায়? ওরা বললো, না যায় না। বললাম, দুবলার চর কি দেশের বাইরে? সবাই হেসে দিলো। বললাম, এই চর দেশের মধ্যে। চলবে দেশের আইনে। আপনারা বন বিভাগকে কর-খাজনা দিয়ে এখানে ব্যবসা করছেন না? একজন বললো, আপনার কথা ঠিক আছে। কিন্তু এখানে সাহেবদের ইচ্ছাই আইন। বললাম, এটা সুন্দরবন। এখানকার আইন রক্ষার দায়িত্ব বন বিভাগের।

গলা চড়িয়ে বললাম, সাইফুলের দোকান আমরা খুলে দিলাম। এবার কেউ পারলে আবার বন্ধ করুক। কথাটি বললাম কারণ এখানে জড়ো হওয়া লোকজনদের মধ্যে মহাজনদের লোকজনও আছে। ওরা এই খবর সকাল হওয়ার আগেই সাহেবদের কানে পৌঁছে দিবে। তাই জোর গলায় বললাম, আমি দুবলার চরে থাকবো এক সপ্তাহ। দেখি কে বন্ধ করতে আসে!

নিউমার্কেটের কয়েকটি চায়ের দোকান এখনও খোলা। একটিতে বসে চা খেলাম। গল্পে গল্পে ভোর হলো। আমরা হাঁটা দিলাম। তরুণ নামের এক জেলের ঘরে উঠলাম। রান্নাঘরে উঁকি দিয়ে সর্দার বললেন, পান্তা ভাত খাবেন ভাই? খেলে মরিচ পোড়াবো। বললাম, ক্ষুধা ভালোই লাগছে!

খেতে বসলাম। তরুণ দা বললেন, আমার ঘরে এসে বাসী ভাত খাচ্ছেন? আগে বললে গরম ভাত খাওয়াতে পারতাম। বললাম, কাল খাওয়েন। তরুণ দা বললেন, তাহলে সকালের ট্রিপে সাগরে চলেন, তাজা মাছ খাওয়াবোনে! বললাম, আজ না। কাল যাবো। এ সময় চর ছাড়া উচিৎ হবে না। সাহেবরা কী করে দেখি!

লম্বা ঘুম দিলাম। উঠে দেখি সূর্য মাথার উপর। এর মধ্যে ভাটা হয়ে গেছে। চলছে সার ভাটি। পাশে এসে বসেছে তরুণ এক জেলে উজ্জ্বল। পুরো গোন সাগরে ছিলো। শেষ ট্রিপের মাছ নিয়ে ফিরেছে সে। উজ্বলরা মাছ ধরতে যায় বেশ দূরে। দুবলার চর থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার পথ। বললো, এবার রূপচাঁদা মাছ কম পড়েছে। চিংড়িও আগের মতো নাই। ছুরি, লইট্যাসহ শুঁটকির মাছ ভালোই পেয়েছে।

উঠে বসলাম। বললাম, তাহলে তো মাছ খারাপ হয়নি। সে বললো, দামী মাছ তো পড়লো না। রূপচাঁদা না পড়লে পোষায়? এদিকে নিউমার্কেটের মাইকে ঘোষণা চলছে, বড় শাপলা পাতা মাছ লাগবে। ঢাকায় কোন সাহেবকে পাঠানো হবে সে মাছ। বললাম, ঢাকায় পাঠাবে ভালো কথা। কিন্তু সেই মাছ তোমাদের কাছ থেকে নিবে কেন? দাম দিবে? উজ্জ্বল বললো, কীসের দাম? ওরা দিবে মাছের দাম? রাসমেলার সময় মেহমানরা আসে। তখনও ঘর প্রতি পাঁচ কেজি রূপচাঁদা মাছ দেয়া লাগলো। বড় সাইসের পাঁচ কেজি রূপচাঁদার দাম কতো বলো তো? বললাম, না হলেও এক হাজার টাকা! মানে পাঁচ কেজির দাম কমপক্ষে পাঁচ হাজার। উজ্জ্বল বললো, আমাদের খালি দিতেই হয়।

ডাকাতে চাঁদা নেয়, মুক্তিপণ নেয়, ফরেস্টাররা টাকা নেয়, অন্য বাহিনীর দালালরা ঘুরে বেড়ায়, ওরাও গোন প্রতি টাকা নেয়। খাওয়ার মাছ দিতে হয় সবাইকে। এখানে জেলেদের একটা সমিতি আছে, সিজনে সবাইকে এক হাজার করে চাঁদা দিতে হয়। সেই টাকা কোন কাজে লাগে তাও জানি না। চরে কেই মারা গেলেও লাশ টানতে হয় নিজেদের। আমাদের দিকে কেউ তাকায় না ভাই। তার উপর সাহেব-মহাজনদের চাপ তো আছেই। ওরা বলে ডাকাত ধরলে দেখবে তারা। তারপর যখন ধরে নিয়ে যায় তখন নিজেদেরই টাকা দিয়ে ছাড়াতে হয়।

জেলেরা একটা কথা বলে, বনের ডাকাতের চেয়ে ডাঙ্গার ডাকাতরা বড় ডাকাত। আগে বুঝতাম না। তবে এখন সেটা বুঝি। উজ্জ্বলকে বললাম, বাইরের খালে কোনো ট্রলার ভাসানো আছে? একটু দুবলার চরের ফরেস্ট অফিসে যাবো। সে বললো, তোমাদের ট্রলারই তো ভাসানো। বেলায়েত সর্দারকে ঘুম থেকে ডেকে তুললাম। হাতমুখ ধুয়ে হাঁটা দিলাম। কাদা ভেঙ্গে উঠলাম ট্রলারে। তারপর এক টানে ফরেস্ট অফিস।

দুবলা ফরেস্ট অফিসের দায়িত্বে আছেন মোকাম্মেল ভাই। আমার অনেক আগের পরিচিত। তাঁর সঙ্গে দেখা করলাম। বললাম, চরের বাজারে কম্পিউটারের দোকানগুলো নাকী বন্ধ করে দিচ্ছেন? উনি কিছুই জানেন না। বললাম, জেলেদের দিকে একটু খেয়াল রাখবেন ভাই। চরের ব্যবসায়ীরাও গরীব মানুষ। এখানে মহাজনদের অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। আশা করি সহযোগিতা করবেন। ওসি সাহেব বললেন, অবশ্যই খেয়াল রাখবো। নিয়ম কানুনের মধ্যে থাকলে কোনো দোকান বন্ধ হবে না।

এক কাপ চা খেয়ে ফরেস্ট অফিসের ঘাটে মাছ ধরতে বসলাম। এখানে বড়শিতে ভালো মাছ হয়। সেখানে বসে খবর পেলাম নতুন করে আরেকটি দস্যু বাহিনী নেমেছে সুন্দরবনে। ওহিদুল বড় ভাই সেই দস্যুদলের প্রধান। বড় ভাই নামে পরিচিত এই লোকটি পুরনো দস্যু। সে রাজু বাহিনীর প্রধান সেই রাজু’র আপন বড় ভাই।

(জানুয়ারি ২০১৭, দুবলার চর)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top