রাতেই দেখা দেবে জাহাঙ্গীর বাহিনী | রূপান্তরের গল্প ৩৮৩ | Rupantorer Golpo 383 | দস্যুমুক্ত সুন্দরবন | সুন্দরবনের গল্প | জীবনে ফেরার গল্প | Jibone Ferar Golpo | Sundarbaner Goppo | Story of Sundarbans | মোহসীন উল হাকিম | Mohsin Ul Hakim
রূপান্তরের গল্প ৩৮৩ : আপনি এতো ঘন ঘন ঢাকা যান কেন ভাই? একটি মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে প্রশ্ন করছে ময়না। আমরা দাঁড়ানো খুলনার জিরো পয়েন্টের কাছে, মহাসড়কের পাশে। জাহাঙ্গীরের ছোট স্ত্রী ময়না এখন আমার সামনে। সাথে তাদের সন্তান ইয়াসিন, দস্যুনেতার এ পক্ষের শ্বশুর-শাশুড়ী আর শ্যালক। গত দুই দিন পালিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। গত রাতে ছিলো লবণচরার কোনো এক অজ্ঞাত জায়গায়। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তাড়া খেয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে তারা।
এই চাপে ভয়ঙ্কর দস্যুনেতা ভেঙ্গে পড়েছে। যতোটুকু বুঝতে পারছি তাকে আত্মসমর্পণ করানোর জন্যই এই চাপ। কিন্তু যারা এই চাপ তৈরি করলো, জাহাঙ্গীর সেখানে যাবে না। কিছুতেই সে তাদের মাধ্যমে সারেন্ডার করবে না। সত্যি বলতে, জাহাঙ্গীরের আত্মসমর্পণ করার কথাও না। সে দুজন কর্মকর্তার সাথে সরাসরি কথা বলতো। সারেন্ডারের মুলা ঝুলিয়ে সময় কাটাচ্ছিলো। সামনের ইলিশ মৌসুম পর্যন্ত দস্যুতা করে আত্মগোপনে যাবে, সেই পরিকল্পনাই করছিলো সে। সেই কথা বুঝতে পেরেই তার পরিবারকে তাড়া দেয় সংশ্লিষ্টরা। কিছু সোর্স বেশ তৎপর। মজার কথা হলো, ওদিকের চাপে পড়ে জাহাঙ্গীর এসে ধরা দিলো আমার জালে।
ভয়ঙ্কর এই বনদস্যুকে আমি বিশ্বাস করি না। সেও সারেন্ডার করবে না, আমাকে পছন্দও করে না। আমিও তাকে ভীষণ অপছন্দ করি। বনদস্যুদের অনেকের সাথেই আমার যোগাযোগ হয়েছে বা হচ্ছে, তার মতো মিথ্যাবাদী কাউকে পাইনি।
বনদস্যুরা অপরাধী, নিকৃষ্ট, অত্যাচারী, কেউ কেউ খুনের আসামী। কিন্তু আত্মসমর্পণের দূতিয়ালি করতে গিয়ে তাদের মানুষ হিসাবেই আবিস্কার করেছি। অনুশোচনা, অপরাধবোধে ভুগতে দেখেছি সবাইকে। কিন্তু এই নাটা জাহাঙ্গীরের মধ্যে যেন মনুষত্বের কিছুই নাই। আত্মসমর্পণ করালে সে নিজেকে সংশোধন করবে বলেও মনে হয় না। তারপরও আমার চেষ্টা, অন্তত সুন্দরবন থেকে উঠে আসুক এই অপরাধীরা।
আত্মসমর্পণের তালিকা থেকে জাহাঙ্গীরকে বাদ দিয়েছিলাম। দুই দিন আগ পর্যন্ত তার কথা চিন্তাও করিনি। বরং আলিফ বাহিনীকে এক রকম জোর করে আত্মসমর্পণ করানোর চেষ্টা করছি। তিন দিন আগে তার সাথে দেখাও করলাম। কথা ছিলো উঠে সব ঠিকঠাক করে আলিফ বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করাবো। কিন্তু হিসাব পাল্টে গেলো। জাহাঙ্গীর হঠাৎ করেই পাল্টে দিলো হিসাব।
গত দুই দিন কাহিনী ঘটলো। খুলনা খেকে বাগেরহাট, সেখান থেকে ঢাকার পথ ধরেছিলাম। কিন্তু মাঝ পথ থেকে ফিরতে হলো। কারণ, হঠাৎ করেই জাহাঙ্গীর ডাকাত মত পাল্টেছে। আত্মসমর্পণ করবে। তবে তার আগে একটি কাজ করতে হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে পলাতক ছোট স্ত্রী ময়না, সন্তানসহ স্বজনদের নিরাপদ জায়গায় নিতে হবে। তাদের নিয়ে রাতেই যেতে হবে সুন্দরবন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে দস্যুনেতার পরিবারের সদস্যদের নিজের হেফাজতে নিবো। যাতে অন্য কেউ তাদের ধরতে না পারে। কিন্তু কাউকে হেফাজতে নেওয়ার আইনগত অধিকার কি আমার আছে? অথবা আমার কাছ থেকে যদি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিয়ে নেয়? তাই বরিশাল RAB এর একটি টিমকে আসতে বলেছি। উনারা পথে আছেন। খুলনার জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছাতে আরও ঘণ্টা খানেক সময় লাগবে।
আজ ২৮ জানুয়ারি। রাতেই যাবো সুন্দরবন। জাহাঙ্গীরকে উঠিয়ে আনবো দলবল, অস্ত্রসহ। কাল দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসবেন। বরিশালের রূপাতলীতে হবে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান। তার মানে হাতে একদম সময় নাই। এর মধ্যে প্রথম কাজটি করে ফেলেছি। খুলনার জিরো পয়েন্টের কাছে একটি গাড়িতে বসা দস্যুনেতার পরিবার। ওই গাড়ি থেকে তাদের তুলেছি আমাদের গাড়িতে। এরপর থেকে অপেক্ষা করছি বরিশাল RAB এর আগাম টিমের জন্য।
সকাল থেকে ওরা কিছু খায়নি। রাতেও নাকী ভাত খাওয়ার সুযোগ পায়নি। তবুও ওদের বের হতে দিলাম না। যমুনা টিভির গাড়িতে বসা পুরো পরিবার। শুধু শিশু ইয়াসিনকে নিয়ে নামলাম, খাওয়ালাম। এর মধ্যে ফোনে কথা বলিয়ে দিলাম তার বাবার সাথে। জাহাঙ্গীরকে বললাম, নতুন করে আর কোনো ভুল করবেন না। সে বললো, সব ফোন বন্ধ করে দিছি ভাই। আপনি ছাড়া আমাকে আর কেউ খুঁজে পাবে না।
এই ভুল করা যাবে না! হঠাৎ করে আচরণ বদলাবেন না। কেউ যদি জানে যে আমার মাধ্যমে সারেন্ডার করছেন সেকথা কাউকে বুঝতেও দেওয়া যাবে না। সব ফোন খোলেন। অন্যদের সাথে আগের মতো করে কথা চালিয়ে যান। কিছুতেই যাতে বুঝতে না পারে কী হচ্ছে আজ। এরপর দস্যুদলের উপ প্রধান বাছেরকে বললাম। নিরিবিলি একটা ফোন দিও।
বরিশাল RAB এর লোকজন এসেছে। মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দা তারা। সিভিল পোশাকে চারজন। তাদের মধ্যে দুজনকে চিনি। একজন এগিয়ে আসলেন। বললেন, কী কাজ ভাই? বললাম, মেজর আদনান বলেননি? উনারা বললেন, শুধু আপনার সাথে দেখা করতে বলেছেন। তারপর আপনি যা বলেন তা করতে বললেন। বললাম, গাড়ি কোথায়? উনারা বললেন, গাড়ি তো আনিনি ভাই, মটরসাইকেল নিয়ে আসছি।
মুশকিলে পড়লাম। দস্যুনেতার পরিবারের সদস্যদের তাদের গাড়িতে রাখতে চেয়েছিলাম। কারণ তাদের যদি কেউ ট্র্যাক করে ফেলে তবে অন্য রকম বিপদের মধ্যে পড়বো। কোনো ভাবে বিষয়টি জানাজানি হলে তীরে এসে তরী ডুববে। আমাদের পরিকল্পনার কথা সর্বোচ্চ গোপন রাখতে হবে। সেজন্য আমার ব্যক্তিগত ও অফিসের ফোন নাম্বারটি বন্ধ রেখেছি। একটি গোপন নাম্বারে বাকী কাজগুলো চালিয়ে নিচ্ছি।
গাড়ি নিয়ে একটি নিরিবিলি জায়গায় দাঁড়ালাম। RAB সদস্যরা সেখানে অবস্থান নিয়েছেন। বরিশাল থেকে তাদের মাইক্রোবাস রওনা দিয়েছে। সে পর্যন্ত কোনো রকম ঝুঁকি নিবো না।
মনটা এখন বেশ ফুরফুরে। কারণ নতুন করে আবারও শুরু হচ্ছে আত্মসমর্পণ। দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের বিরোধীতাকারীদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে। সেই সাথে আমার পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হবে। বিশেষ করে জাহাঙ্গীর ডাকাতের এই আত্মসমর্পণ বদলে দিবে সুন্দরবনের হিসাব।
এদিকের সবকিছু নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু স্বস্তি পাচ্ছি না। কারণ, শেষ পর্যন্ত জাহাঙ্গীর কী করবে তা বলা মুশকিল। শুধু মনে হচ্ছে, পরিবারের লোকজনের কাছে পাওয়ার সাথে সাথে চোখ পাল্টি দিবে নাটা জাহাঙ্গীর। এই কাজে বেশ পারদর্শী সে। ওদিকে আসলে কী হচ্ছে জানার চেষ্টা করছি। বাছেরের ফোনের জন্য অপেক্ষা করছি।
আরও ঘণ্টা খানেক পর বরিশাল থেকে গাড়ি আসলো। ময়না ও তার পরিবারের সদস্যদের তাতে পার করলাম। একটা দুশ্চিন্তা গেলো। কিন্তু মূল দুশ্চিন্তা এখনও রয়ে গেছে। সত্যি বলতে ওদের কাছে যাওয়ার আগ পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাবে না।
দুটি গাড়ি নিয়ে আমরা রওনা হলাম পিরোজপুরের উদ্দেশ্যে। তবে এখনই মংলায় যাবো না। সন্ধ্যার দিকে বরিশাল থেকে মেজর আদনান তাঁর টিমসহ আসবেন। আমরা সেই বহরে যোগ দিবো।
পর পর দুটি গাড়ি চলছে। রূপসা সেতু পার হওয়ার পর এলো বাছেরের ফোন। বললাম, নিরিবিলি আছো? পাশে তোমার লিডার নাই তো? সে বললো, মামা আছে। কথা বলবেন? আমি আসলে আলাদা ভাবে কথা বলতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু সে কথা বলি কী করে? বুঝতে পারছি, দলের কাউকে চোখের আড়াল করছে না জাহাঙ্গীর। তাই মনের ভেতরে উঁকি দেওয়া সন্দেহের কথা বলতে পারছি না।
ওদিকের সঠিক অবস্থা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। ভাবছি, যদি কোনো ঝামেলা থাকে, মানে জাহাঙ্গীর যদি অন্য কোনো পরিকল্পনা করে? তখন কী হবে? রাতের সুন্দরবনে নতুন কোনো বিপদের মুখোমুখি হবো না তো? কিন্তু কিছু করার নাই।
ভাবছি, আমাদের দিক থেকেও কোনো ভুল করা যাবে না। বিশ্বাস না করলেও আপাতত জাহাঙ্গীরের উপর ভরসা রেখেই এগুতে হবে। ভরসার জায়গা একটাই, ভয়ঙ্কর ওই দস্যুনেতার পরিবারের সদস্যরা এখন আমাদের সাথে।
দড়াটানা সেতু পার হলাম। কচুয়া পার হয়ে চলে গেলাম পিরোজপুর জেলায়। নিরিবিলি একটি জায়গা দেখে থামলাম। জাহাঙ্গীরের স্ত্রী ময়নাসহ অন্যদের বের করলাম। তাদের সাথে কথা বললাম। বুঝতে চাইলাম জাহাঙ্গীরের অন্য কোনো মতলব আছে কী না! অবশ্য তেমন কিছু মনে হলো না।
ময়নাকেও আমি বিশ্বাস করি না। তার কথাবার্তাও আমার ভালো ঠেকছে না। কিন্তু আপাতত তা প্রকাশ করলাম না। মাথায় শুধু একটা লাইন- ভুল করা যাবে না। ময়না ভীষণ বুদ্ধিমতী। জেনেশুনে বিয়ে করেছে জাহাঙ্গীরকে। দস্যুতা করা না করা নিয়ে সিদ্ধান্ত সে দেয়। মাঝে মাঝে নিজেও যায় সুন্দরবনে। শুনলাম, সব রকমের বন্দুকও নাকী চালাতে শিখেছে সে।
বললাম, নোয়া বাহিনীর হামলার সময় গোলাগুলি করছিলেন? হেসে দিলো সে। একই সাথে চোখে ফুটে উঠলো রাগ। বললো, আপনার জন্য ভালো করে প্রতিশোধটা নিতে পারলাম না। একবার অ্যাটাক করলো ওরা। কিন্তু কাউকে ঘায়েল করেক পারেনি। বললাম, দলের মধ্যে তেমন কোনো যোদ্ধা নাই।
ময়না বলে, আর কয়দিন সময় পেলে দেখতেন! আমাগের দলটাকে আরও বড় করতাম। আরও দশটা বন্দুক কেনার কথা ছিলো। এবার বেতন দিয়ে কিছু ফাইটার আনার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু আপনারা কিছুই করতে দিলেন না! বললাম, ডাকাতির টাকাগুলো সব কি আপনার কাছে রাখেন?
ময়না বললো, সব কি দেয়? ও তো ভালো মানুষ না! বড় বউয়ের কাছেও টাকা পাঠায়। কিছু টাকা খুলনার কোন এক মাস্টার সাহেবের কাছে রাখে। মানিকগঞ্জের জমিগুলো আমার নামে দিলো। এর পর থেকে আর বড় কোনো টাকা পয়সা দেয়নি। ভাবছিলাম, আর কয় মাস ডাকাতি করায়ে ইন্ডিয়া চলে যাবো। কিন্তু প্রশাসন সেই সময় দিলো না!
বনরুটি আর কলা দিয়ে দুপুরের খাবার সারলাম। পাশে একটি ছোট্ট বাজার। সেখানে এক চায়ের দোকানে বসলাম। মনে পড়লো, সেই যে সকালে আমার স্ত্রীর সাথে কথা হলো, তারপর আর কথা হয়নি। আজ তার ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা। ফোন ধরছে না সে। এখন বাজে বিকাল পাঁচটা। হয়তো ডাক্তারের চেম্বারে গেছে। কিন্তু কিছুতেই ফোন ধরছে না। বাসার অন্যদের ফোন দিলাম। শুনলাম, আমার স্ত্রী ঘরেই আছে। ডাক্তারের কাছে যায়নি।
মনটা ভীষণ খারাপ। খুব কষ্ট পাচ্ছি। মনে হচ্ছে সব ছেড়েছুড়ে ফিরে যাই। সত্যি বলতে, আমার এই যখন তখন ঢাকার বাইরে চলে যাওয়া, দিনের পর দিন বাইরে থাকা, সবকিছুই সহ্য করছে সে। এবার তাড়াতাড়ি ফিরবো সে কথাও বলে এসেছিলাম। ডাক্তারের সময়ও সেই হিসাব করেই নেওয়া। কিন্তু এখন করবো কী? এদিকে যে অবস্থা তাতে আগামী কাল বিকাল পর্যন্ত পুরোটাই ব্যস্ত থাকতে হবে।
সবকিছু ঠিক থাকলে রাতে যাবো সুন্দরবন। কোন অঞ্চলে দস্যুরা দেখা দিবে জানি না। তারপর তাদের নিয়ে আসবো। বরিশালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়া পর্যন্ত আমার ছুটি নাই।
পরিবারের প্রয়োজনকে পাশে রাখলাম। ভাবছি, দুদিন পর পারিবারিক কাজটি সারতে পারবো। কিন্তু জাহাঙ্গীরকে তো এমন বেকায়দায় আর পাবো না! বার বার ফোন দিচ্ছি আমার স্ত্রীর ফোনে। ফন ধরছে না। আজ মনে হয় আর ফোন ধরবে না সে!
এদিকে মেজর আদনান ফোন করে জানালেন, রওনা দিয়েছেন তাঁরা। ওদিকে জাহাঙ্গীরও ঘন ঘন ফোন দিচ্ছে। বললাম, কোন এলাকায় থাকবেন আপনারা? সে বললো, রওনা দেন, তারপর বলবো। বললাম, আমি কি আপনার বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাচ্ছি? মূল নদী কোনটা? নাম বলেন। আর কয়টার মধ্যে পৌঁছাতে হবে সেটা জানান। দস্যুনেতা বললো, এভাবে কোনো বনদস্যু জায়গার নাম বলে? বললাম, আপনার পরিবার কিন্তু আমার হাতে। বেশি ঝামেলা করলে তাদের যারা খুঁজছে তাদের হাতে তুলে দিবো!
আমার মাথাটা একটু গরম। সত্যি বলতে আমার পরিবারের কথা ভাবতে গিয়ে মনটা খারাপ। মেজাজটাও খিটখিটে হয়ে গেছে। আমাকে মাথা গরম করতে দেখে এগিয়ে আসে ময়না। ফোনটা চেয়ে নিলো।
অকথ্য ভাষায় কয়েকটা গালি দিয়ে বললো, ভাই যা বলে, যেভাবে বলে, সেভাবে চলবা! এরপর জাহাঙ্গীর বললো, আমার বউটা আপনাদের কাছে। তাই কিছু বললাম না। বললাম, আর একটা কথাও উল্টা পাল্টা শুনতে চাই না। লোকেশন বলেন। কয়টার মধ্যে আসবো সেটাও বলেন। সেভাবে ট্রলার রেডি করতে হবে, রওনা দিতে হবে।
শুধু বললো, আদাচাইয়ের ভাড়ানী। রাতের প্রথম জোয়ারে ভদ্রায় ঢুকবেন। বললাম, এই ফোনটা নিয়ে নেটওয়ার্কে থাকবেন। আমরা সময়ের মধ্যে পৌঁছে যাবো জায়গা মতো। ফোন রাখার আগে জাহাঙ্গীর বললো, আমার পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসবেন। তা না হলে আমি উঠবো না। বললাম, সবাই মানে? সে বললো, আমার ময়না, ইয়াসিন, শ্বশুর, শাশুড়ী আর শালা। পাঁচজনকেই নিয়ে আসবেন। বললাম, আপনার বড় স্ত্রী আর তার ওই ঘরের বাচ্চাদেরও নিয়ে আসি?
হেসে দিলো জাহাঙ্গীর। বললো, তাহলে তো আমাকে আর খুঁজে পাবেন না। বললাম, ফোন রাখেন। দেখা হবে প্রথম জোয়ারে।
(২৮ জানুয়ারি ২০১৭)